‘কবিতা, তুমি স্বপ্নচারিণী হয়ে খবর নিও না’, ‘দিওয়ানা দিওয়ানা তোমার প্রেমের দিওয়ানা’, ‘গুরু ঘর বানাইলা কি দিয়া’, ‘দশ মাস দশ দিন ধরে গর্ভে ধারণ’, ‘আসবার কালে আসলাম একা’, ‘দুষ্ট ছেলের দল’, ‘বিজলী চলে যেওনা’, ‘মীরা বাঈ’, ‘পাগলা হাওয়ার তোড়ে’সহ জনপ্রিয় সব গান গেয়ে টাঙ্গাইল মাতালেন নগর বাউল জেমস।
টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ উপলক্ষে ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার (১৩ মে) রাতে টাঙ্গাইলের শহিদ মারুফ স্টেডিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গান গেয়ে দর্শক মাতান জেমস। লক্ষাধিক দর্শককে সুরের জাদুতে মুগ্ধ করেন এই বরেণ্য শিল্পী।
আগেই ছড়িয়ে পড়ে জেমসের আগমনের খবর। ফলে গতকাল দুপুর থেকে টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলাসহ আশেপাশের জেলা থেকে জেমস ভক্তরা স্টেডিয়ামে উপস্থিত হতে থাকেন। জেমস ছাড়াও এ অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেন বিভিন্ন জনপ্রিয় ব্যান্ড শিল্পীরা। এদিন বিকেলে শুরু হওয়া কনসার্টটি চলে রাত পর্যন্ত।
আয়োজক কর্তৃপক্ষ জানান, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপের আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপস্থিত ছিলেন চ্যাম্পিয়নশীপের চেয়ারম্যান, কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল, সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানুসহ বিএনপি ও আয়োজক কমিটির নেতৃবৃন্দ।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানবীর আহমেদ বলেন, “মঞ্চে জেমস মানেই যেন অন্যরকম উন্মাদনা। দর্শকদের পাগলামো আর হইহুল্লোড়ের সঙ্গে সঙ্গে এই রকস্টারও মেতে ওঠেন।”
শহরের আকুরটাকুর পাড়ার বাসিন্দা আজগর আলী। ষাটোর্ধ্ব এই দর্শক বলেন, “ইতিপূর্বে টাঙ্গাইলে এত দর্শক নিয়ে কেউ অনুষ্ঠান করতে পারেনি। শহিদ মারুফ স্টেডিয়াম ও আশেপাশের এলাকায় তিল ধারণের জায়গা ছিল না। সব মিলিয়ে লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতি ছিল।”
কলেজ শিক্ষার্থী সুমাইয়া রহমান জেমসের গান উপভোগ করেছেন। অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, “অনুষ্ঠানে আসতে অনেক বেগ পোহাতে হয়েছে। গুরু জেমসের গান শুনে তা পূরণ হয়েছে। জেমস টাঙ্গাইলে এসে এক নতুন ইতিহাস তৈরি করলেন।”
চ্যাম্পিয়নশীপের চেয়ারম্যান, কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, “আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে, বাংলাদেশের শিল্পীদের ব্র্যান্ডিং করার জন্য বিভিন্ন প্রোগাম আমরা হাতে নিয়েছি। তারই ধারাবাহিকতায় বিন্দুবাসিনী চ্যাম্পিয়নশীপে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছি। আমাদের প্রথমে লক্ষ্য রাখতে হবে, সবার আগে বাংলাদেশ।”
অঙ্গীকার করে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, “১৭ বছর পর ফ্যাসিবাদ বিদায় নিয়েছে। তারেক রহমানের নির্দেশে ফ্যাসিবাদ বিদায়ের জন্য সকলে মিলে ভূমিকা পালন করেছি। সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাস, মাদকমুক্ত ও কিশোর গ্যাং মুক্ত আদর্শিক টাঙ্গাইল গড়ে তুলতে চাই। সকলের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি সফল হয়েছে।”
টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি তানভীর আহমেদ বলেন, “পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন ছিল। দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়েছে।”