ক্যাম্পাস

সেশনজট নিরসনের দাবিতে চবির শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন

সেশনজট নিরসনের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলা বিজ্ঞান বিভাগের ১২ শিক্ষার্থী।

শনিবার (২৪ মে) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ আমরণ অনশন শুরু করেন তারা।

অনশনরত শিক্ষার্থীরা হলেন- বিভাগটির ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী আবু রাজিন মন্ডল, হাফসা কাউসার মিশু, তারেক মাহমুদ, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ জাভেদ ও বখতিয়ারুল ইসলাম, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের মিফতাহ জাহান মীম, পাবত্রী রানী ও শ্রুতি রাজ চৌধুরী, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্বাধীন বসু মিয়া, ক্যাএসিং মারমা, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মোহাইমিন আনাম ও ওয়ালিউল্লাহ।

অনশনে শিক্ষার্থীদের দুটি দাবি হলো- সেশনজট নিরসন ও সর্বোচ্চ চার মাসের ভেতরে ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করার মাধ্যমে সেমিস্টার শেষ করা; কমপক্ষে আগামী ১২ মাস বা ৩ সেমিস্টারের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশের মাধ্যমে ক্লাস শুরু, ফর্ম ফিলআপ, পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ ও ক্যালেন্ডার অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করার প্রতিশ্রুতি লিখিত আকারে প্রদান করা।

অনশনরত শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন বলেন, “আমাদের সমস্যা নিরসনের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। বিগত প্রশাসন শুধু আশ্বাসই দিলেও কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি। এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এজন্যই অনশনে বসতে বাধ্য হয়েছি। দাবি আদায় না হলে আমরা অনশন ভাঙব না।”

অনশনকারী শিক্ষার্থী মিফতাহ জাহান মীম বলেন, “আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরেই সিনিয়রদের দুই-তিনটা আন্দোলন দেখেছি। বিগত প্রশাসনের আমলেও আন্দোলন করতে হয়েছিল, এখনো করতে হচ্ছে। সেশনজট দূর করার ব্যপারে বর্তমান প্রশাসনের সঙ্গে কয়েকবার কথা হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। অথচ অনেক সিনিয়রদের চাকরির বয়স চলে যাচ্ছে, কারো পরিবারের সমস্যা। এগুলো কে দেখবে? আমরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাই।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর এমএইচ আরিফ বলেন, “তাদের পরিচালক এবং সভাপতি এসে সেশনজট নিরসনের রোড ম্যাপ ঘোষণা করলে ঝামেলা বন্ধ হয়ে যায়। এসব ক্ষেত্রে আমাদের খুব একটা করণীয় থাকে না, যদি না সংশ্লিষ্ট বিভাগ তাদের পরিকল্পনা প্রকাশ না করে।”

শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলা বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এনএম সাজ্জাদুল হক বলেন, “শিক্ষক সংকটের কারণেই বিভাগটিতে তীব্র সেশনজট রয়েছে। বর্তমানে বিভাগে একজনও শিক্ষক নেই। আমি নিজেও অন্য বিভাগের হয়ে এখানে দায়িত্বপালন করছি। খণ্ডকালিন হিসেবে এ বিভাগের সঙ্গে সম্পর্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ক্লাস করান। কিছুদিন আগে বিভাগটির জন্য পাঁচজন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নিয়োগপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্রুত তারা নিযুক্ত হবেন।”

তিনি আরো বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে আমি পরিপূর্ণ একমত। তারা ৬ মাসের সেমিস্টার ৪ মাসে চাচ্ছে; এটি আমার জন্য আরো ভালো খবর। সেশনজট নিরসন ও অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার বাস্তবায়নে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।”