সারা বাংলা

লক্ষ্মীপুরে কোরবানির হাট: কম দামে খুশি ক্রেতা, হতাশ বিক্রেতা

আগামী ৭ জুন দেশজুড়ে পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। ইতোমধ্যে লক্ষ্মীপুরের পাঁচ উপজেলায় বসেছে স্থায়ী-অস্থায়ী পশুর হাট। এসব হাটে জমে উঠছে পশু কেনাবেচা। ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি ও পশুর দর কষাকষি চলছে পুরোদমে।

এবার আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কম দামে পশু কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা। তবে, হতাশ খামারি ও ব্যাপারীরা। তারা বলছেন, গরু পালনের খরচ তোলা তো দূরের কথা, অনেক ক্ষেত্রে লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের। 

প্রাণিসম্পদ বিভাগের সূত্রে জানায়, লক্ষ্মীপুরে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার খামার রয়েছে। এসব খামারে ১ লাখ ৩৯ হাজার পশু কোরবানির জন্য লালন-পালন করে প্রস্তুত করা হয়েছে। গত বছরে যে পশু বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায়, এবার একই ধরনের পশু বিক্রি হচ্ছে প্রায় লাখ টাকায়। প্রকার ভেদে প্রতিটি গরু ২০-২৫ হাজার টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।  

লক্ষ্মীপুর সদরের দালালবাজার এলাকার অস্থায়ীসহ কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা যায়, দেশি গরুর সরবরাহ ভালো। অনেক খামারই তাদের খামারের গরু নিয়ে হাটে আসছেন বিক্রির আশায়। ক্রেতারা গরুর প্রত্যাশিত দাম না বলায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বিক্রেতারা।

খামারি ও ব্যাপারীরা জানান, তারা সারা বছর গরু লালন-পালন করেছেন একটু লাভের আশায়। হাটে ক্রেতারা আশানুরূপ দাম বছলেন না। অনেক গরু কম দামে বিক্রি হচ্ছে। গতবারের তুলনায় প্রতি গরু ২০-২৫ হাজার টাকা কম দামে বিক্রি হচ্ছে। 

ক্রেতারা বলছেন, বাজারে প্রচুর পরিমাণে পশু রয়েছে। পছন্দের গরু কিনতে পেরে খুশি অনেকেই। আবার অনেকেই বাজারের ব্যবস্থাপনা নিয়েও সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন।

গরু কিনতে দালালবাজার হাটে আসা আব্দুল হাই লিংকন বলেন, “আজ কয়েটি গরু দেখেছি। দাম মোটামুটি ভালো। আশা করছি, সাধ্যের মধ্যে একটি গরু কিনতে পারব।”

গরু বিক্রেতা মোহাম্মদ হাশেম বলেন, “৪০ বছর ধরে গরু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ক্রেতারা দাম ক্রয় মূল্যের চেয়েও কম বলছেন। এতে হতাশায় ভুগছি। লাভের মুখ দেখব কিনা জানা নেই।”

মিরন নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, “হাটে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ ও সেনাবাহিনী সবকিছু তদারকি করছে।”

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কুমুদ রঞ্জন মিত্র বলেন, “পশুর কোনো ঘাটতি নেই। প্রতিটি হাটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যেদের পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা বাজার মনিটরিং করছেন। খামারি ও ব্যাপারীরা যাতে নিরাপদে পশু বিক্রি করতে পারেন সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলায় চাহিদার তুলনায় ৫০ হাজার পশু বেশি রয়েছে।”

জেলা পুলিশ সুপার আকতার হোসেন বলেন, “জেলার পাঁচটি উপজেলার যেসব স্থানে পশুর হাট বসেছে, প্রত্যেকটিতে পোশাকে ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।”

লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, “মানুষ যেন ঈদুল আজহা সুন্দরভাবে উদযাপন করতে পারে, সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি হাটে জাল টাকা প্রতিরোধে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কঠোর নজরদারি রয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাজার মনিটরিং করছেন।”