জাতীয়

অলিগলিতে উঠেছে কোরবানির পশু, খামারে বিক্রি কেজি দরে

পবিত্র কোরবানির ঈদের আর মাত্র দুই দিন বাকি। আগামী ৭ জুন মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীর পশুর হাটগুলো জমে উঠেতে শুরু করেছে। একইসঙ্গে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাট বাদে বিভিন্ন এলাকার অলিগলিতে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা পশু বিক্রি শুরু করছেন। বিভিন্ন এলাকায় ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা পশুর খামারগুলোতেও কোরবানির পশু বিক্রি শুরু হয়েছে। কোনো কোনো খামারে কেজিপ্রতি ৫৫০ টাকা দরে (লাইভ ওয়েট) বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশু। বুধবার (৪ জুন) রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার ত্রিমোহনী, গৌরনগর, বাসাবো মাদারটেক, গোড়ান ও রামপুরা এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এবার রাজধানীর মেরাদিয়া ও আফতাবনগর আবাসিক এলাকায় কোরবানির পশুর হাট বসছে না। তাই রামপুরা, বনশ্রী, মেরাদিয়া, দক্ষিণ বনশ্রী, মাদারটেক, নন্দীপাড়া এলাকায় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা পশু বিক্রি শুরু করছেন। এর আগে এসব এলাকায় মৌসুমী ব্যবসায়ী ও খামারিরা কোরবানির পশু বিক্রি করেননি। তাই এবার দুইটি বড় কোরবানির হাট না বসায় রামপুরা, বনশ্রী, মেরাদিয়া, দক্ষিণ বনশ্রী, মাদারটেক, নন্দীপাড়ায় বসবাসরত এলাকাসী ডেমরার আমুলিয়া আলীগড় মডেল কলেজের উত্তর পাশের খালি জায়গায় হাট ও উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘ ক্লাব সংলগ্ন হাটে ছুটছেন। একই সঙ্গে অলিগলিতে গড়ে ওঠা মৌসুমি ব্যবসায়ী ও খামারীদের পশু দেখতে ভিড় করছেন সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী। ব্যবসায়ী ও খামারিরা মনে করছে, ঈদের আগে বুধবার (৪ জুন) অফিস আদালতের শেষ কর্মদিবস। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) থেকে শুরু হচ্ছে সরকারি ছুটি। তাই বৃহস্পতিবার থেকেই কোরবানির পশুর হাটগুলো পুরোপুরি জমে উঠবে। গত কয়েদিন ধরে হাটগুলোতে পশু বিক্রির পরিমান কম হয়েছে। ক্রেতারা শুধু দর-দাম জানছেন। বৃহস্পতিবার থেকে পুরোদমে পশু কেনাবেচা শুরু হবে আশা করছেন ব্যবসায়ি ও খামারিা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাঘুরে দেখা গেছে, মৌসুমি ব্যবসায়ি তাদের পচ্ছন্দসই জায়গায় অর্থাৎ রাস্তার পাশে, অলিগলি ও বাসা-বাড়ির গ্যারেজে কোরবানির পশু বিক্রি করছেন। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা না আসলেও স্থানীয় এলাকাবাসীরা সেখান থেকে পশু কিনছেন। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পেছে আশপাশের এলাকার বাসীন্দারা পশু দেখতে ভিড় করছেন। পূর্ব বাসাবোর সরদারবাড়ি কবরস্থানের পাশে একটি বাড়ির গ্যারেজে এবার পশু বিক্রি করছেন স্থানীয় বাসীন্দা শহীদুল ইসলাম ও তার অংশীজন। তিনি এবার দিনাজপুর থেকে ছোট, মাঝারি ও বড় সাইজের প্রায় ৪০টি গরু বিক্রির জন্য এনেছেন। ইতোমধ্যে ১০টি গরু বিক্রি হয়েছে বলে জানা গেছে। একইভাবে মাদারটেক আব্দুল আজিজ হাই স্কুল ও কলেজের পাশে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গরু বিক্রি করতে দেখা গেছে। আর গোরান বাজার, দক্ষিণ বনশ্রী মসজিদ মার্কেট ও ইউনিটি এইড হাসপাতালের পাশে কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ীদের ছাগল বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এদিকে এবারই প্রথম দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার ই-ব্লকে এক ব্যবসায়ী ময়মনসিংহ থেকে ৮টি গরু এনেছেন। তবে স্থানীয় বাড়িওয়ালাদের চাপে বি-ব্লকের কেরফা গলিতে গরুগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়। 

খিলগাঁও এলাকার ত্রিমোহনী গৌরনগর এলাকায় গড়ে উঠেছে ফ্রেশি ডট ফার্মের গরুর খামার। এখানে কেজি দরে বা লাইভ ওয়েটে গরু বিক্রি করতে দেখা গেছে। প্রতি কেজি ৫৫০ টাকা দরে গরু বিক্রি করা হচ্ছে। তবে বড় সাইজের গরু কিনলে দাম কিছুটা কম রাখা হবে। প্রতিষ্ঠানটি গরু বিক্রির পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মাংস সরবরাহ করে থাকে। দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার সি ব্লকে আলী এগ্রো লিমিটেড কোরবানির পশু বিক্রি করছে। এবারই প্রথম প্রতিষ্ঠানটি দক্ষিণ বনশ্রীতে এভাবে কোরবানির পশু বিক্রি করছে। সেখানকার দায়িত্বরত একজন কর্মচারী জানান, ১৫টি মাঝারি ও বড় সাইজের গরু আনা হয়েছে। ক্রেতারা আসছেন, দেখছেন, দর-দাম করছেন। ইতোমধ্যে কয়েকটি গরু বিক্রি হয়েছে। আশা করছি, ঈদের আগেই সবগুলো গরু বিক্রি হয়ে যাবে।

এদিকে দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার ডি ব্লকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পঞ্চাশোর্ধ্ব এক নারীকে দুইটি খাসি বিক্রি করতে দেখা গেছে। দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২৮ হাজার টাকা এই জোড়া খাসির দাম চাচ্ছি। কেউ বলছে ২০ হাজার টাকা, আবার কেউ বলে ২২ হাজার টাকা। আরেকটু দাম বাড়ালেই দিয়ে দেব।