যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ শুরু করলে মধ্যপ্রাচ্যে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক স্থাপনা ও ঘাঁটিগুলোতে ভয়ংকর আক্রমণ চালাবে ইরানের মিত্ররা। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র গর্জে উঠবে। এমনটি বলছেন মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ইরানি অধ্যাপক জোহরে খারাজমি।
তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক খারাজমি বলেছেন, “ইরানের যে হাজারো ভিন্ন পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানেন এবং ইরানের আঞ্চলিক মিত্ররা আমেরিকান ঘাঁটিগুলোর ওপর ব্যাপক হামলা করতে পারে, সেটিও তিনি জানেন।”
আলজাজিরাকে এই অধ্যাপক বলেন, “ট্রাম্প নিজেই এদিক-ওদিক করছেন এবং সরাসরি যুদ্ধে জড়ানোর ব্যাপারে তাকে দ্বিধান্বিত মনে হচ্ছে।”
খারাজমি আরো বলেন, “এখনো যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের আটজনের মধ্যে প্রায় ছয়-সাতজন কূটনৈতিক সমাধানের কথা ভাবছেন এবং সরাসরি যুদ্ধে জড়ানোকে সমর্থন করছেন না।”
“আমি মনে করি, যদি পশ্চিমা বিশ্ব, চীন, রাশিয়া ও আরব রাষ্ট্রগুলোসহ অন্যান্য দেশগুলো আরো দায়িত্বশীল ও জবাবদিহিমূলক ভূমিকা পালন করে, তাহলে তারা সত্যিকারের একটি কূটনৈতিক সমাধান খুঁজে পাবে।”
১৩ জুন ভোরে ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তারপর পাল্টা হামলায় নামে ইরান। উভয় দেশ হামলা ও পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির খুব কাছে পৌঁছে গেছে বলে অভিযোগ তুলে দেশটিতে নজিরবিহীন হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল; যেখানে আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা বলছে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর কাছাকাছি পৌঁছানোর কোনো প্রমাণ তাদের কাছে নেই।
ইরাকে রাসায়নিক অস্ত্রভাণ্ডার আছে বলে অভিযোগে ২০০৩ সালে হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। যদিও তেমন কোনো অস্ত্রই ছিল না ইরাকে। এবার যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে ইসরায়েল ইরাক মডেলে ইরানে হামলা চালাচ্ছে, যার কোনো ভিত্তিই নেই।
ইরানি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ লিখেছে, জায়নবাদী শাসন ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে একটি উস্কানিমূলক আগ্রাসী যুদ্ধ শুরু করে। তারা ইরানের পারমাণবিক, সামরিক ও আবাসিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়, যার ফলে অনেক শীর্ষ সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক নিহত হন।
ইরানি সামরিক বাহিনী তাত্ক্ষণিকভাবে পাল্টা হামলা শুরু করে। ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর মহাকাশ বিভাগ ২১ জুন পর্যন্ত ‘ট্রু প্রমিজ থ্রি’ (সত্য প্রতিশ্রুতি-৩) অভিযানের অংশ হিসেবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দফায় দফায় পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।