ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার মধ্যে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান।
মাখোঁ জানিয়েছেন, পেজেশকিয়ানের কাছ থেকে ফোন পেয়েছেন তিনি। শনিবার (২১ জুন) তাদের মধ্যে এই ফোনালাপ হয়।
আলোচনার সময় মাখোঁ বলেন, ইউরোপীয় শক্তিগুলোর সঙ্গে ইরানের পরমাণু আলোচনাকে ‘গতিশীল’ করতে তিনি ও পেজেশকিয়ান একমত হয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে মাখোঁ লিখেছেন, “আমি জোর দিয়ে বলছি, ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে পারবে না এবং এটি ইরানের দায়িত্ব যে তারা তাদের শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যের যথাযথ প্রমাণ দেবে।”
তিনি আরো বলেন, “আমি বিশ্বাস করি যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসার এবং আরো বড় বিপদ এড়ানোর পথ এখনো আছে।”
পেজেশকিয়ান বারবার বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করার কোনো পরিকল্পনা নেই, তবে তারা পারমাণবিক শক্তি ও গবেষণার বৈধ অধিকার অনুসরণ করবে।
১৩ জুন ভোরে ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তারপর পাল্টা হামলায় নামে ইরান। টানা ৯ দিন ধরে উভয় দেশ হামলা ও পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির খুব কাছে পৌঁছে গেছে বলে অভিযোগ তুলে দেশটিতে নজিরবিহীন হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল; যেখানে আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা বলছে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর কাছাকাছি পৌঁছানোর কোনো প্রমাণ তাদের কাছে নেই।
ইরাকে রাসায়নিক অস্ত্রভাণ্ডার আছে বলে অভিযোগে ২০০৩ সালে হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। যদিও তেমন কোনো অস্ত্রই ছিল না ইরাকে। এবার যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে ইসরায়েল ‘ইরাক মডেল’ অনুসরণ করে ইরানে হামলা চালাচ্ছে, যার কোনো ভিত্তিই নেই।
ইরানি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ লিখেছে, জায়নবাদী শাসন ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে একটি উস্কানিমূলক আগ্রাসী যুদ্ধ শুরু করে। তারা ইরানের পারমাণবিক, সামরিক ও আবাসিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়, যার ফলে অনেক শীর্ষ সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক নিহত হন।
শনিবার (২১ জুন) পর্যন্ত ইরানে ইসরায়েলের হামলায় চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে অন্তত ৫৪ জন।
ইরানি সামরিক বাহিনী তাত্ক্ষণিকভাবে পাল্টা হামলা শুরু করে। ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর মহাকাশ বিভাগ ২১ জুন পর্যন্ত ‘ট্রু প্রমিজ থ্রি’ (সত্য প্রতিশ্রুতি-৩) অভিযানের অংশ হিসেবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দফায় দফায় পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।