দুই ইউরোপীয় জায়ান্ট, দুই ভিন্ন ছন্দ। নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে দেখা গেল এমনই এক অসম লড়াই। যেখানে পিএসজির ধারালো আক্রমণের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করল রিয়াল মাদ্রিদ। ৪-০ গোলের হারের পর মাঠে নয়, রিয়ালকে খুঁজে পাওয়া গেল হতাশ চোখের করিডোরে।
দলকে নতুন এক যুগে নিতে এসেছেন কোচ জাবি আলোনসো। কিন্তু ক্লাব বিশ্বকাপের এই মঞ্চে তার শুরুর গল্পটা হলো অনেকটা বিপরীত স্রোতের মতো। পিএসজির কাছে এমন বড় ব্যবধানে হার শুধু পরাজয় নয়, বরং বড় এক আত্মজিজ্ঞাসার নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে রিয়ালের জন্য।
খেলার মাত্র ৯ মিনিটের মধ্যেই দুইবার বল জালে জড়ায় ফরাসি জায়ান্টরা। ফ্যাবিয়ান রুইস ও উসমান দেম্বেলের দুই গোল রিয়ালের রক্ষণভাগের নড়বড়ে অবস্থানকে নগ্ন করে দেয়। এরপর রুইস নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ২৪তম মিনিটে। আর শেষ মুহূর্তে বদলি ফরোয়ার্ড গঞ্জালো রামোস করেন চতুর্থ গোলটি।
এই লজ্জাজনক পরাজয়ের পরও ভেঙে পড়েননি আলোনসো। বরং ম্যাচ শেষে ঠান্ডা মাথায় বললেন, “আমরা খেলায় ঢোকার আগেই দুই গোল হজম করে ফেলি। মানের দিক থেকে আমাদের পারফরম্যান্স আজ নিচে নেমে গিয়েছিল। খুবই কষ্টদায়ক হার। কিন্তু এই কষ্টই ভবিষ্যতের প্রস্তুতির জন্য দরকার।”
শুধু ব্যর্থতা নয়, আত্মসমালোচনাতেও পিছপা নন এই স্প্যানিশ কোচ। জানালেন, এদিন পুরনো পাঁচ ডিফেন্ডার কৌশল ছেড়ে চার রক্ষণভাগের ছকে নেমেছিলেন। কিন্তু পরিকল্পনাটি সফল হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে কিছু পরিবর্তন আনলেও সেটা ছিল খুবই দেরিতে। ফলাফল? রিয়াল পুরো ম্যাচজুড়েই ব্যাকফুটে।
তবুও এই হারের মধ্যেই লুকিয়ে আছে নতুন শুরুর বার্তা। আলোনসো আশাবাদী, “আমরা একধাপ দূরে ছিলাম। পরের মৌসুম থেকে একদম নতুন মানসিকতা নিয়ে এগোবো। আমাদের লক্ষ্য এমন একটি দল গড়া, যারা এক হয়ে লড়বে, এক হয়ে জিতবে।”
এই কথার মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতের রিয়ালের ছক। বড় পরিবর্তনের আভাস মিলেছে তার কণ্ঠে; দলে আসতে যাচ্ছে নতুন মুখ, কৌশলেও হবে রদবদল। কারণ, ইউরোপের ইতিহাস গড়া ক্লাবটি হার মানার জন্য নয়, ঘুরে দাঁড়ানোর জন্যই।