সারা বাংলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যানজট, ৬ ঘণ্টায় ৩ কিলোমিটার পাড়ি 

জাকির হোসেন, পেশায় ট্রাক চালক। সিলেট থেকে পণ্য নিয়ে যাচ্ছিলেন ঢাকায়। বৃহস্পতিবার রাত তিনটায় এসে পৌঁছান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহবাজপুর এলাকায়।

শুক্রবার (১১ জুলঅই) সকাল ৯টা পর্যন্ত তিনি তিন কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পেরেছেন। এ অবস্থা ঢাকা সিলেট মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী চালকদের। 

টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ঢাকা সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দের কারণে কারণ সৃষ্ট যানজটের কারণে দুর্ভোগ বেড়েছে যাত্রীদের। 

শুক্রবার সকাল থেকে আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইল বিশ্বরোড (কুট্টাপাড়া মোড়) হয়ে শাহবাজপুর এলাকা পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার ব্যাপী এই যানজট ছিল। 

যানজটে আটকে পড়া হবিগঞ্জের সোহেল নামে অপর যাত্রী জানান, পরিবার নিয়ে সিরাজগঞ্জের একটি বিয়েতে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন তারা। কিন্তু যানজটের কারণে বিয়েতে আর অংশগ্রহণ করা সম্ভব হবে না হয়তো। 

স্থানীয় বাসিন্দা, চালক ও হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফোরলেন নির্মাণকাজের কারণে সড়ক সরু হয়ে গেছে। পাশাপাশি আশুগঞ্জ ও বিশ্বরোড মোড় এলাকায় তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এর সঙ্গে দুটি মোড়ের অকার্যকর ব্যবস্থাপনাও যুক্ত হয়ে ভয়াবহ যানজট তৈরি করেছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত চার লেনে উন্নীতকরণ কাজ ছয় বছর ধরে চলছে। এক পাশের কাজ শেষ হলেও সম্পূর্ণরূপে চালু হয়নি। ফলে সরু একটি পাশ দিয়েই দীর্ঘদিন ধরে যান চলাচল করছে।

এদিকে আশুগঞ্জ গোলচত্বর ও বিশ্বরোড মোড়ে গভীর অসংখ্য গর্তে ধীরগতিতে চলছে পণ্যবাহী গাড়ি। কখনও সেগুলো গর্তে আটকে গিয়ে বিকল হয়ে পড়ছে। ফলে যানজট বাড়ছে। এসব জায়গায় যান চলাচলের গতি নামিয়ে আনতে হচ্ছে ঘণ্টায় ১ থেকে ৫ কিলোমিটারে।

অন্যদিকে, আশুগঞ্জ থেকে ঢাকামুখী লেনে ভৈরব সেতু পর্যন্তও যানজট ছড়িয়ে পড়ে। সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে অসংখ্য বাস, ট্রাক ও প্রাইভেট কার। অনেক যাত্রী রাত থেকে সকাল পর্যন্ত যানবাহনের মধ্যেই আটকে ছিলেন।

চালক ও যাত্রীরা জানান, বেশ কয়েক দিন ধরে এই সড়কের বিভিন্ন অংশে খানাখন্দের কারণে গাড়ি আটকে যায়। ফলে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। এক ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগে। এছাড়া গাড়িরও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃর্তপক্ষ দ্রুত মেরামত করে দিলে তাহলে দুর্ভোগ লাগব হবে।

সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি মামুনুর রহমান বলেন, “আশুগঞ্জ ও বিশ্বরোড মোড়ের চারপাশে তিন ফুটের বেশি গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে গাড়ি এসে ৭০ কিলোমিটার গতি থেকে কমে ৫ কিলোমিটারে নামতে বাধ্য হচ্ছে। একটি ট্রাককে একটি মোড় অতিক্রমে লাগছে ২০ মিনিট পর্যন্ত। ফলে যানজট অনিবার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।”