ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মস্কোকে সহায়তা করার জন্য উত্তর কোরিয়া ধারাবাহিকভাবে রাশিয়াকে ১৫২ মিমি কামানের গোলা সরবরাহ করেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে রবিবার (১৩ জুলাই) ইয়োনহাপ নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে। খবর আনাদোলুর।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার (ডিআইএ) একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়া অস্ত্র ও কামানের গোলা ভর্তি ২৮ হাজার কন্টেইনার রাশিয়ায় পাঠিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, “১৫২ মিমি একক গোলা দিয়ে গণনা করলে (সরবরাহকৃত গোলাগুলোর সংখ্যা) ১ কোটি ২০ লাখেরও বেশি পৌঁছেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।”
দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা দাবি করেছে, উত্তর কোরিয়া আগামী দুই মাসে রাশিয়ায় আরো সেনা পাঠাতে পারে।
২০২৪ সালের জুন মাসে পিয়ংইয়ংয়ে নেতা কিম জং উন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষরের পর, উত্তর কোরিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোকে সহায়তা করার জন্য হাজার হাজার সেনা পাঠিয়েছে।
রাশিয়ার নিরাপত্তা প্রধান শোইগু বলেছেন, উত্তর কোরিয়া ইউক্রেন সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলে মাইন অপসারণ ও পুনর্গঠন প্রচেষ্টায় সহায়তা করার জন্য ছয় হাজার কর্মী রাশিয়ায় পাঠাবে।
এপ্রিল মাসে, দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা দাবি করেছিল, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ান বাহিনীর পক্ষে লড়াই করার সময় উত্তর কোরিয়ার সম্ভবত ৪ হাজার ৭০০ জন সেনা হতাহত হয়েছে, যার মধ্যে ৬০০ জন নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
গত বছরের অক্টোবর থেকে উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে অস্ত্র এবং আনুমানিক ১৩ হাজার সেনা সরবরাহ করেছে বলে জানায় সংস্থাটি।
গত শনিবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে এক বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন বলেছেন, উত্তর কোরিয়া ইউক্রেনে রাশিয়ার নেওয়া যেকোনো পদক্ষেপকে নিঃশর্ত সমর্থন দেবে।
উত্তর কোরিয়ায় লাভরভের সঙ্গে বৈঠকে কিম জানান, ইউক্রেন সংকটের ‘মূল কারণ’ মোকাবিলায় ‘রুশ নেতৃত্বের সব ধরনের পদক্ষেপকে’ উত্তর কোরিয়া সমর্থন করে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, কিম ও লাভরভের মধ্যে উষ্ণ ও আস্থার পরিবেশে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কিম জং উন আরো জানান, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, রুশ সেনাবাহিনী ও জনগণ দেশকে মর্যাদা ও মৌলিক স্বার্থ রক্ষার পবিত্র দায়িত্বে বিজয় অর্জন করবেই।
দক্ষিণ কোরিয়া উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, এই সামরিক সহায়তার বিনিময়ে উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার কাছ থেকে উন্নত প্রযুক্তি, এমনকি পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করতে পারে।