রাজশাহীর আদালত চত্বরে তর্কাতর্কির সময় নিকাহ রেজিস্ট্রারকে (কাজি) লাথি মারার অভিযোগ উঠেছে এক নারীর বিরুদ্ধে। এ সময় কাজিও পাল্টা লাথি মারেন ওই নারীকে।
সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার আমলি আদালতের সামনে ঘটনাটি ঘটে।
অভিযুক্ত নারীর বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর। তিনি রাজশাহী মহানগরের বাসিন্দা। অপর অভিযুক্ত হলেন- জেলার মোহনপুর উপজেলার বাকশিমইল ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজি মোকাদ্দেম হোসেন শাওন। এসময় সেখানে শাওনের ভাই ধুরইল ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজি মোস্তফা হোসেন ভিক্টর উপস্থিত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে নারীকে ধমক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আদালত চত্বরে এক নারীর সঙ্গে দুই কাজির তর্কাতর্কি চলছিল। একপর্যায়ে ওই নারী ক্ষিপ্ত হয়ে কাজি শাওনকে লাথি মারেন। জবাবে শাওনও ওই নারীর পেটে লাথি মারেন। এসময় ভিক্টর তার ভাই শাওনকে শান্ত করেননি। তিনি নিজেও ওই নারীকে ধমক দিতে থাকেন।
ঘটনার সময় ওই নারী চিৎকার করে আশপাশের লোকজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তখন অনেক মানুষ জড়ো হয়। এ সময় কাজি শাওন প্রকাশ্যে ওই নারীকে অশ্লীল ভাষায় বকাবকি করতে থাকেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তারা ওই নারী এবং দুই কাজিকে সেখান থেকে সরিয়ে দেন।
ভুক্তভোগী নারী জানান, সম্প্রতি তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। দেনমোহরের ৩৮ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। এ নিয়ে মামলা চলছে। দুই কাজি তাকে আপস করার জন্য চাপ দিচ্ছেন, যেন তারা দেনমোহরের টাকায় ভাগ বসাতে পারেন। আপসে রাজি না হওয়ায় কাজি শাওন তাকে মারধর করেন।
তিনি জানান, এ ঘটনায় তিনি আদালতে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
যোগাযোগ করা হলে কাজি মোস্তফা হোসেন ভিক্টর বলেন, “ওই নারীই আগে আমার ভাইকে লাথি মেরেছে। পরে আমার ভাইও তাকে লাথি মেরেছে। এমনটি হওয়া উচিত হয়নি।” নারীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে জানতে কাজি মোকাদ্দেম হোসেন শাওনের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
কাজির এমন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে রাজশাহী জেলা রেজিস্ট্রার আব্দুর রকিব সিদ্দিকী বলেন, “নারী লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়ে কেউ আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”