একজন মা গর্ভবস্থায় নানা ধরণের সমস্যা মোকাবিলা করতে থাকেন। কিন্তু এমন এক গর্ভাবস্থা আছে যার নাম ‘ক্রিপটিক প্রেগনেন্সি’। এমন গর্ভাবস্থা হলে মা বুঝতেই পারেন না যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা। একে বারে শেষ সময়ে এসে বুঝতে পারেন প্রকৃত অবস্থা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার এক তরুণীর ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটেছে। ওই তরুণীর নাম শার্লট সামার্স।
শার্লট সামার্স-এর ওজন দিন দিন কী কারণে বেড়ে যাচ্ছিলো এবং পোশাক আঁটসাঁট হয়ে যাচ্ছিলো—তা তিনি বুঝে উঠতে পারছিলেন না। ২০ বছরের এই তরুণী অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের অধিবাসী। শেষ পর্যন্ত তার ওজন বেড়ে যাওয়ার যে কারণ পাওয়া যায়, তা শার্লটের জন্য ছিল দারুণ বিস্ময়ের।
নিজের সেই অসাধারণ অভিজ্ঞতার কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছেন শার্লট। তিনি বলেন, ‘‘সন্তান প্রসবের মাত্র ১৭ ঘণ্টা আগে জানতে পারি আমি অন্তঃসত্ত্বা।’
এই ঘটনা বিরল হলেও চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, এমনটা অসম্ভব নয়।
এক ভিডিওতে শার্লট বলেন, ‘‘আমি তখনো আঁটসাঁট জামা কিনছিলাম। পেট একটু বড় হয়ে গিয়েছিল, ভেবেছিলাম এমনিই হচ্ছে। আমি আড়াই বছর ধরে একটি সম্পর্কে আছি, সুখী আছি। তো ভেবেছিলাম, এইটা বুঝি সুখী সম্পর্কে থাকার হচ্ছে। তা ছাড়া সে সময় নানা চাপের ভেতর দিয়ে আমার জীবন চলছিল।’’
গত ৬ জুন হজমের অসুবিধা অনুভব করেন শার্লট। এরপরে তিনি চিকিৎসকের কাছে যান। এ সময় চিকিৎসক অপ্রত্যাশিতভাবে তাকে গর্ভাবস্থা পরীক্ষার পরামর্শ দেন। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা শেষে চিকিৎসক নিশ্চিত করেন, শার্টল আসলে ৩৮ সপ্তাহ চার দিনের অন্তঃসত্ত্বা। এই তথ্য শুনে সবাই চমকে যান, শার্লট নিজেও হতবাক হয়ে পড়েন।
আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষার পরে শার্লট আরও একটি অপ্রত্যাশিত খবর পান। সেটি হলো, তার প্লাসেন্টায় সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যার ফলে দ্রুত তার সন্তান প্রসব করানোর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন চিকিৎসকেরা।সেদিনই তাকে প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় এবং গর্ভাবস্থা নিশ্চিত হওয়ার মাত্র ১৭ ঘণ্টা ২১ মিনিট পর তিনি একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন।
এভাবে মা হয়ে দারুণ খুশি শার্টল। তিনি বলেন, ‘‘ অন্য সবকিছু যেমনই হোক, আমি মা হতে পেরে আনন্দিত। আমরা দুই জনেই ভালো আছি, সুখে আছি, আর আমাদের নতুন জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করছি।’’