আন্তর্জাতিক

সিরিয়ায় সাম্প্রদায়িক সংঘাতে নিহত বেড়ে ৩৫০

সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সুয়েইদা প্রদেশে সুন্নি বেদুঈন ও দ্রুজ গোষ্ঠীর যোদ্ধাদের মধ্যে টানা পাঁচ দিন ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছে। এই সংঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫০ জনে দাঁড়িয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) ব্রিটেনভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস-এর বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ফ্রান্সভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি। 

সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস-এর তথ্যানুসারে, রবিবার থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে নিহতদের মধ্যে ৭৯ জন দ্রুজ যোদ্ধা ও ৫৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। সংস্থাটি জানায়, নিহতদের মধ্যে ২৭ ব্যক্তিকে প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন বাহিনী ‘ঠাণ্ডা মাথায়’ হত্যা করেছে।

এর আগে নিহতের সংখ্যা ৩০০ বলে উল্লেখ করেছিল সংস্থাটি।

অপরদিকে, নিরাপত্তা বাহিনীর ১৮৯ সদস্য ও ১৮ জন বেদুঈন যোদ্ধাও এই সংঘাতে নিহত হন।

পর্যবেক্ষক সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, সুয়েইদায় নিহতদের মধ্যে হাসান আল-জাবি নামে এক গণমাধ্যমকর্মী ছিলেন। সিরিয়ার সাংবাদিকদের ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় আল-জাবি দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয়েছেন।’

যুক্তরাজ্যভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস সিরিয়ার বিভিন্ন অংশে অবস্থানরত সূত্রদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। 

সংস্থাটির বরাত দিয়ে ফ্রান্স টুয়েন্টিফোর এক প্রতিবেদনে বলেছে, দ্রুজ যোদ্ধা ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলায় সরকারি বাহিনী বেদুঈদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে।

ইসরায়েল গতকাল বুধবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত সিরিয়ার সামরিক দপ্তরে বিমান হামলা চালিয়ে এর  প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ইসরায়েল বলেছে, সিরিয়ার সেনাবাহিনী সুয়েইদা প্রদেশে থেকে সরে না আসলে তারা হামলার মাত্রা আরো বাড়াবে। 

ইসরায়েল দ্রুজ সম্প্রদায়কে তাদের নিজেদের লোক হিসেবে বিবেচনা করে এবং তাদেরকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।  

সিরিয়ার সরকার জানিয়েছে, তাদের সেনাবাহিনী সুয়েইদা প্রদেশ থেকে সরে আসছে। ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র  জানিয়েছে, তারা এ অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষকে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করার আহ্বান জানিয়েছে।

সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা বৃহস্পতিবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে বলেন, “যারা আমাদের দ্রুজ গোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন চালিয়েছে, তাদেরকে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। দ্রুজ গোষ্ঠীর সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের ওপর বর্তায়।”

তিনি জানান, পরিস্থিতি শান্ত হলে স্থানীয় কতৃপক্ষের কাছে ওই অঞ্চলের নিরাপত্তার ভার ফিরিয়ে দেওয়া হবে।