সময়টা ২০০৭ সাল। সে সময় লন্ডনের রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন জেমস বোয়েন।তিনি তখন একজন গৃহহীন, একাকী মানুষ। যে কিনা হেরোইনের নেশায় ডুবে ছিলেন বছরের পর বছর। জীবনের প্রতি আশা হারিয়ে ফেলেছিলেন বোয়েন। তার সামনে তখন অন্ধকার ভবিষ্যৎ-এর হাতছানি।
একদিন তার সঙ্গে দেখা হয় এক আহত বিড়ালের। বিড়ালটির শরীর খারাপ ছিলো। জেমস বিড়ালটিকে নিজের সামান্য সামর্থ্যে চিকিৎসা করান, খাবার দেন এবং যত্ন নিতে শুরু করেন। আর তখন থেকেই বিড়ালের সঙ্গে বন্ধুত্ব শুরু হয় বোয়েনের।
পথচারীরা এই অদ্ভুত জুটি দেখে মুগ্ধ হতেন
জেমস বোয়েন বিড়ালটির নাম রাখেন ‘Bob’ বা বব। প্রতিদিন সকালে জেমস যখন রাস্তায় গান গেয়ে কিছু পয়সা রোজগার করার চেষ্টা শুরু করেন, বোয়েন যখন গান গাইতেন তখন তার কাঁধে চেপে বসে থাকত বিড়ালটি। পথচারীরা এই অদ্ভুত জুটি দেখে মুগ্ধ হতেন এবং টাকা দিতেন। এবং ধীরে ধীরে জেমসের আয় বাড়তে থাকে। এই বিড়ালটি শুধু অর্থ নয়, জীবনের উদ্দেশ্য, ভালোবাসা এবং দায়িত্ববোধ ফিরিয়ে আনতে পেরেছিলো জেমস বোয়েনকে।
বব-এর সাহচর্যে জেমস ধীরে ধীরে মাদক ছেড়ে দেন জেমস বোয়েন। তিনি নতুন জীবন শুরু করেন। পরে তাদের এই বাস্তব গল্প নিয়েই লেখেন বিখ্যাত বই “A Street Cat Named Bob’ আর ওই বইটিই হয়ে ওঠে আন্তর্জাতিক বেস্টসেলার বই। বইয়ের সাফল্যের পর এই কাহিনি নিয়ে তৈরি হয় একটি সিনেমা, যা আরও লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনুপ্রেরণা দেয়।
বিড়াল আর মানুষের বন্ধুত্বের এই বই ও সিনেমা শুধু নয়, সত্যিকার গল্পটি আজও হাজারো মানুষকে শিখিয়ে দেয়—ভালোবাসার এমন এক শক্তি রয়েছে যা মানুষকে অসাধারণ এক জীবনের সঙ্গে পরিচয় ঘটিয়ে দিতে পারে।