গুণে গুণে ৫ ছক্কা। দৃঢ়চেতা ইনিংসে যতটুকু পাওয়ার ছিল জাকের আলীর ততটুকু পেয়ে গেছেন ততক্ষণে। একার লড়াইয়ে পরিস্থিতি বিবেচনায় দলের চাহিদা পূরণ করে ফেলেছেন। তবুও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন আরেকটি ছক্কার। তাহলে টার্গেট পূরণ।
মিরপুর শের-ই-বাংলায় গতকাল দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে আগে ব্যাটিং পায় বাংলাদেশ। শুরুর ব্যাটিং ধসে বাংলাদেশ বড় স্কোরের আশা ছেড়ে দেয়। উইকেট, কন্ডিশন বিবেচনায় ১৪০ এর আশেপাশে পুঁজির টার্গেট করে দল। জাকেরের একার ব্যাটিংয়ে সেদিকেই এগিয়ে যায়। ইনিংসের শেষ বলে একটি ছক্কা হলেই বাংলাদেশের পুঁজি হয়ে যেত ১৩৯!
জাকের টাইমিং মেলাতে পারেননি আগের ৫ ছক্কার মতো। বল যায় ফিল্ডারের হাতে। জাকেরের ৫৫ রানের ইনিংসে ভর করে ১৩৩ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। এরপর বোলারদের নৈপূণ্যে ৮ রানে ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করে স্বাগতিকরা।
ম্যাচের শেষ দিকে রোমাঞ্চ ছড়িয়েছিল। একটু এদিক-সেদিক হলেই ফল ভিন্ন হতে পারত। কত রান নিরাপদ হতে পারত সেই ধারনা খুব একটা ছিল না জাকেরেরও। ১৫০-১৬০ হওয়া সম্ভব ছিল বলে বিশ্বাস করেন তিনি, ‘‘আমরা তো জানি, এখানে হাই স্কোরিং ম্যাচ হয় না। তাই আমরা ওইরকম পরিকল্পনা নিয়েই এগোচ্ছিলাম। ১৫৫-১৬০ হওয়া সম্ভব ছিল। যদি আমরা আদর্শ ব্যাটিং করতে পারতাম। তবে আমি ব্যাটিংয়ে যাওয়ার আগে অধিনায়ক বলে দিয়েছিলেন, যেহেতু আমরা দ্রুত উইকেট হারিয়ে ফেলেছি, ১৪০ রানের জন্য যেন যাই। আজকের পরিস্থিতির চাহিদা এটিই ছিল। এর ওপরে যেতে পারলে আরও ভালো হতো।”
২৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরে ১৩৩ রানে নিয়ে যাওয়ার কাজটা সহজ ছিল না। ৩৩ রান করে জাকেরকে সঙ্গ দেন মাহেদী। এরপর চার ব্যাটসম্যানের কেউই দুই অঙ্কে যেতে পারেননি। লেজের ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে ব্যাটিং করা জাকেরের পুরোনো অভ্যাস এবং এতে পুরোপুরি অভ্যস্ত। বয়সভিত্তিক দলেও একই কাজ করে এসেছেন। সতীর্থদের ভাবনা, ম্যাচের পরিস্থিতি, দলের চাহিদা সবটুকু জানা থাকায় ইনিংস মেরামতের কাজে সুবিধা হয় তার।
নিজের ব্যাটিং নিয়ে আদ্যোপান্ত বলেছেন জাকের, ‘‘লেজের সারির ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে আমি বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকেই ব্যাটিং করি। বয়সভিত্তিকে আমি ৭ নম্বরে খেলতাম। অনূর্ধ্ব-১৭তে আমার একটা একশ আছে। লেজের (ব্যাটসম্যানদের) সঙ্গে ৭১ রানের জুটি গড়ে একশটা করেছিলাম। এগুলো আমার অভ্যাস আছে। এগুলো নিয়ে চিন্তাই করি না। চেষ্টা থাকে, আমার সঙ্গে যে থাকে, তাকে ব্যাটসম্যান হিসেবে একটু নিরাপদ রেখে, দুই দিক থেকেই যেন রানটা হয়, সেই চেষ্টা করি।”
৩২ টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে জাকের দ্বিতীয়বার পেলেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অপরাজিত ৭২ রান করে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন। এছাড়া আরো একটি ফিফটিসহ উল্লেখযোগ্য ইনিংস রয়েছে তার। তবে সেসব তাকে টানে না। তার মাথায় কেবল ‘‘উইনিং নক।’’
“ম্যাচ জেতানো ইনিংস খুব জরুরি। আমি শুধু ম্যাচ জেতানো ইনিংসগুলোই কাউন্ট করি। এছাড়া আর কোনো কিছু কাউন্ট করি না। যদি ভালো খেলি আর দল না জেতে, আমি কাউন্ট করি না। আজকে অবদান রাখতে পেরেছি, আজকে কাউন্ট হবে।”
ঢাকা/ইয়াসিন