গুম কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন, ‘‘গুমের সঙ্গে জড়িত শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিচার নিশ্চিত না হলে এ দেশে গুমের সংস্কৃতি আবারো ফিরে আসার শঙ্কা রয়েছে। এর অন্যতম কারণ গুমের আলামত নষ্ট এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনকি রয়েছে হুমকি ও নানা ধরনের অসহযোগিতাও।’’
তিনি বলেন, ‘‘তবে কমিশন মনে করছে, বিচারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- গুমের সঙ্গে জড়িত তৎকালীন বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ ব্যক্তিরা পালিয়ে যাচ্ছেন। এতে বিচার নিয়ে সংশয় তৈরি হচ্ছে। তবে, গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে গুমের ঘটনাগুলো অনুসন্ধানের মাধ্যমে এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করার সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ করছে।’’
শনিবার (২৬ জুলাই) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গবেষণাগার হলে ‘বলপূর্বক গুমের ঘটনা মোকাবেলা: কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়’ শীর্ষক সেমিনারে সাজ্জাদ হোসেন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘‘চারটি স্তরে সাধারণ মানুষকে গুম করা হতো। একটি গ্রুপ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নজরদারির মধ্যে রাখত। অপর গ্রুপ তাকে তুলে নিত। এই গ্রুপ গুমের শিকার ব্যক্তিকে হয় জঙ্গি কিংবা সন্ত্রাসী অথবা অস্ত্র মামলা দিয়ে আদালতে চালান দিত। অথবা মেরে ফেলত। সর্বশেষ গ্রুপটি ভারতে পাচার করে দিত অথবা আয়না ঘরে গুম করে রাখত।’’
সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘‘গুম কমিশন চার ভাবে অনুসন্ধান করছে। এগুলো হচ্ছে- সকল আয়নাঘর বা বন্দিশালা পরিদর্শন, সংশ্লিষ্টদের তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ, ভারতীয় কারাগারে বাংলাদেশিদের আটকের তথ্য চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পত্র প্রেরণ এবং ভারতে পুশইন এর তালিকা ধরে অনুসন্ধান করা। এভাবে গুম কমিশন অভিযুক্তদের বিচারের ব্যাপারে কাজ করছে।’’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন গুম কমিশনের সদস্য ড. নাবিলা ইদ্রিস ও জাতিসংঘের ঢাকাস্থ মানবাধিকার বিষয়ক কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন।
আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম, খুলনা জেলা আইন কর্মকর্তা (জিপি) অ্যাডভোকেট ড. মো. জাকির হোসেন, জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তৌহিদুর রহমান চৌধুরী তুষার ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক ড. নাজমুস সাদাত শুভ প্রমুখ।