ক্যাম্পাস

বামপন্থিদের চাপে নিজামী-সাঈদী-সাকা চৌধুরীদের ছবি সরালো ঢাবি প্রশাসন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে জুলাই বিপ্লবের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শাখা ছাত্রশিবির তিন দিনব্যাপী ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) টিএসসিতে ‘আমরাই ৩৬ জুলাই: আমরা থামবো না’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত জামায়াত নেতা গোলাম আজম, মতিউর রহমান নিজামী, দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী, আলী আহসান মুজাহিদ, মীর কাশেম আলী, কামরুজ্জামান চৌধুরী ও বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ছবি প্রদর্শন করে। তবে বামপন্থি সংগঠনের নেতাকর্মীদের চাপে এসব ছবি সরিয়ে দিতে বাধ্য হয় ঢাবি প্রশাসন।

জানা গেছে, বিকেলে টিএসসিতে শিবিরের প্রদর্শনীর স্থানে গিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থি নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ঢাবির সহকারী প্রক্টর রফিকুল ইসলাম। পরে বামপন্থিদের চাপের মুখে ছবিগুলো সরিয়ে ফেলে প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা। 

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে ছাত্রশিবিরকে জানিয়ে এবং তাদের সম্মতিতেই ছবি সরানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ঢাবি শাখা শিবিরের ছাত্র আন্দোলন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম। 

এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর রফিকুল ইসলাম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে শিবির সম্মতিক্রমেই ছবিগুলো সরানো হচ্ছে। কোনো ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি আমরা চাই না।”

এর আগে, ওই চিত্র প্রদর্শনী নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয় এবং বামপন্থি নেতাকর্মীরা ব্যাপক আপত্তি জানাতে থাকে। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বেশ কিছু নেতাকর্মীও ছবিগুলো সরিয়ে ফেলার জন্য শিবিরের কাছে অনুরোধ করে।

ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয়েছিল, তাদের তিন দিনব্যাপী এই আয়োজনে ‘জুলাই বিপ্লব’ এর তাৎপর্য তুলে ধরা, শহীদ ও আহত পরিবারের অভিজ্ঞতা সরাসরি শোনা এবং প্রতিরোধ চেতনা পুনর্জাগরণের প্রয়াস থাকবে। পাশাপাশি ছাত্ররাজনীতির ভবিষ্যৎ ও ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে গণআলোচনাও হবে কর্মসূচির অন্যতম অনুষঙ্গ।

অনুষ্ঠানের প্রথম দিন মঙ্গলবার ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী, বিপ্লবী গান ও কবিতা, শহীদ পরিবার ও আহতদের স্মৃতিচারণ, বিকেলে মাইম পরিবেশনা ও নাটক এবং রাতে ব্যতিক্রমধর্মী ‘প্ল্যানচেট বিতর্ক’ অংশ ছিল দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত। অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে ‘৩৬ জুলাই এক্সপ্রেস’ নামক একটি চলমান ট্রেনের আদলে নির্মিত ডকুমেন্টারিতে দেখানো হয় কিভাবে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের শিকার হয় সাধারণ মানুষ এবং কিভাবে একেকজন শহীদ হয়ে উঠেন প্রতিরোধের প্রতীক।