ওমান থেকে ঢাকায় ফেরেন মধ্যরাতে। সেখান থেকে গ্রামের বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ওই প্রবাসীর পরিবারের সাতজন। ধারণা করা হচ্ছে, চালক ঘুমিয়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনায় পড়ে তাদের বহনকারী হায়েস গাড়িটি।
বুধবার (৬ আগস্ট) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাড়ির রাস্তার মাথায় হায়েসটি খাদে ছিটকে পড়ে, বৃষ্টিতে জায়গটিতে পানি জমে আছে।
ওমান প্রবাসী বাহার উদ্দিন দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরেছেন। তার গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম চওপল্লী। তাকে নিতে ঢাকায় এসেছিলেন তার পরিবারের সদস্যরা।
নিহত সাতজনের পরিচয় জানিয়েছে পুলিশ। তারা হলেন: বাহার উদ্দিনের মা মোরশিদা (৫৫), স্ত্রী কবিতা (২৪), মেয়ে মিম (২), নানি ফয়জুন্নেছা (৮০), ভাবি লাবনী (৩৩), ভাতিজি রেশমী (৮) ও লামিয়া (৯)।
তবে বাহার উদ্দিন বেঁচে আছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর সেখানে অপেক্ষায় থাকা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটি প্রাইভেটকার ও একটি হায়েসে করে লক্ষ্মীপুরে যাচ্ছিলেন ওমান থেকে ফেরা বাহার উদ্দিন। এর মধ্যে হায়েসটি ছিটকে গিয়ে রাস্তার খাদে পড়ে, ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই সাতজন।
স্থানীয়রা জানান, ভোরে এই দুর্ঘটনা হয়। সেসময় লোকজন কিছু বুঝে উঠতে পারেননি। পরে আলো দেখে আশপাশের মানুষ এগিয়ে গিয়ে মরদেহ উদ্ধারে সহায়তা করে।
চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি মো. মোবারক হোসেন ভূঁইয়া দুর্ঘটনার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন। তার ধারণা, চালক ঘুমিয়ে পড়ায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়। কয়েকজন বের হতে পারলেও সাতজন ভেতরে আটকা পড়ে মারা যান।
তাদের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি মোবারক।
বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মো. মনির হোসেন বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত দুটি মরদেহ পেয়েছি। ধারণা করা হচ্ছে তারা ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। বাকিদের মরদেহও আসছে, বিস্তারিত পরে বলা যাবে।”
ঘটনাস্থল থেকে বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি মো. লিটন দেওয়ান বলেন, “রেকারের সাহায্যে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িটি খাল থেকে তোলা হয়েছে। ঘটনাস্থলে আর কোনো মরদেহ নেই। ওমান প্রবাসী বেঁচে আছেন। নিহতদের পরিচয় শনাক্তে হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে।”
বাহার উদ্দিনের পরিবারে মাতম চলছে। একই পরিবারের সাতজনের মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।