আন্তর্জাতিক

উত্তরাখণ্ডে আকস্মিক বন্যায় ভেসে গেলেন ১১ ভারতীয় সেনা

ভারতের উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার ধারালি গ্রামে ভয়াবহ মেঘ ভাঙনের ফলে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ আছেন ১০০ জনেরও বেশি। যার মধ্যে ১১ ভারতীয় সেনাও আছেন। 

বুধবার (৬ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে ক্ষীর গঙ্গা নদীর জলাধার এলাকায় মেঘ ভাঙনের ঘটনাটি ঘটে। হঠাৎ বন্যার পানি, কাদা এবং ধ্বংসস্তূপের ঢেউয়ে ধরলি গ্রামের অন্তত অর্ধেক অংশ চাপা পড়ে যায়। গঙ্গার উৎপত্তিস্থল এবং অনেক হোটেল, রেস্তোরাঁ ও হোম স্টে-র আবাসস্থল গঙ্গোত্রীতে যাওয়ার পথে ধারালি হলো প্রধান যাত্রাবিরতি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ওই এলাকার ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, পাহাড় থেকে তীব্র পানির স্রোত নদীর তীরবর্তী বসতিগুলোর দিকে ছুটে আসছে। ভয়ে মানুষের চিৎকার শোনা যাচ্ছে। তিন এবং চার তলা বাড়িসহ সংলগ্ন ভবনগুলো তাসের মতো ভেঙে পড়ছে। 

উত্তরকাশীর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত আর্যের মতে, এখন পর্যন্ত কমপক্ষে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

ধারালিই একমাত্র গ্রাম নয়, যেখানে এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব বিনোদ কুমার সুমন জানিয়েছেন, একই পাহাড়ের দুটি ভিন্ন দিক দিয়ে তীব্র স্রোত প্রবাহিত হয়েছে, একটি ধারালির দিকে এবং অন্যটি সুক্কি গ্রামের দিকে। উত্তরকাশিতে এখনও রেড অ্যালার্ট জারি রয়েছে।

উত্তরাখণ্ডের হারসিলেও একটি সেনাক্যাম্পে আঘাত হেনেছে আকস্মিক বন্যা। এতে ওই ক্যাম্প থেকে কমপক্ষে ১১ জন সেনা নিখোঁজ রয়েছেন।

সেনাবাহিনী, পুলিশ, জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (এনডিআরএফ) এবং রাজ্য দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশ থেকে এনডিআরএফ দলগুলোকেও বিমানে করে পাহাড়ি রাজ্যে পাঠানো হয়েছে।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মঙ্গলবার উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামির সঙ্গে কথা বলেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য সাতটি উদ্ধারকারী দল পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার একসঙ্গে কাজ করছে, জীবন বাঁচানোর জন্য সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নিচ্ছে।

পার্শ্ববর্তী হিমাচল প্রদেশের কিন্নৌরেও মেঘ ভাঙনের ও ভারী বৃষ্টিপাতের ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে টাংলিগ ড্রেনের ওপর একটি সেতু ভেসে গেছে।

মেঘ ভাঙনকে ভারতের হিমালয়ীয় অঞ্চলগুলোতে সবচেয়ে বিধ্বংসী প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসাবে গণ্য করা হয়। মেঘ ভাঙন যখন আঘাত হানে তখন খুব অল্প সময়ের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, ২০-৩০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে প্রতি ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটারেরও বেশি হারে বৃষ্টিপাত, তীব্র বাতাস ও বজ্রপাতকে মেঘ ভাঙন বলা হয়।