রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়েছে আজ।
রবিবার (১৭ আগস্ট) সকাল থেকেই রাবির ৬৯টি বিভাগ পৃথকভাবে বিভিন্ন আয়োজনে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিয়েছে।
সকাল থেকেই রবীন্দ্র ভবন, সিরাজী ভবন, শহিদুল্লাহ ভবন, মমতাজ ভবনসহ সব ভবনেই নবীন শিক্ষার্থীদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে উঠে। শিক্ষার্থীদের অনেকে ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসে এসে ক্লাসরুম, বিভাগ ও হল ঘুরে দেখেছেন। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ বা নতুন বন্ধুদের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে দিচ্ছেন ছবি।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিনের অনুভূতি জানিয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আবু হুরায়রা কাব্য বলেন, “এটি জীবনের পাতায় একদম নতুন এক অধ্যায় খুলতে চলেছে। চারপাশে থাকবে অচেনা মুখ, নতুন স্বপ্ন আর অজানা সম্ভাবনা। উত্তেজনা, কৌতূহল আর খানিকটা শঙ্কা-সব মিলিয়ে হৃদয়ের ভেতরে এক অন্যরকম ঢেউ উঠছে। এতদিনের অপেক্ষা, প্রস্তুতি আর স্বপ্নগুলো এবার বাস্তবে রূপ নেবে।”
তিনি আরো বলেন, “আমি এই গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতার পরিবারে যোগ দেওয়ার জন্য ভীষণ উদগ্রীব। সিনিয়রদের সঙ্গে আন্তরিক ও সম্মানজনক সম্পর্ক গড়ে তুলে, তাদের অভিজ্ঞতা ও দিকনির্দেশনা থেকে শিখে এগিয়ে যেতে চাই। এই মুহূর্তটা যেন আমার জন্য কেবল শুরু নয়,এটা আমার গল্পের প্রথম আলোকিত বাক্য।”
ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান বলেন, “এটি শুধু একটি ক্লাস শুরুর দিন নয়, বরং আমার জীবনের এক নতুন অধ্যায়ের দরজা খুলে যাওয়ার মুহূর্ত। চারপাশে থাকবে অচেনা মুখ, কিন্তু সেই অচেনাতেই লুকিয়ে থাকবে নতুন বন্ধুত্ব, নতুন অভিজ্ঞতা আর অসংখ্য সম্ভাবনা। আমি জানি এই পথ সহজ হবে না, তবে আমি প্রস্তুত চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে। নিজেকে গড়ে তুলতে, আর সেরাদের মধ্যে নিজের জায়গা করে নিতে চাই।”
অনুভূতি প্রকাশ করেন সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসাইন রিয়াদ বলেন, “ক্লাস শুরুর মাধ্যমে আমার জীবনের ক্যানভাসে একেবারে নতুন রঙের আঁচড় পড়তে চলেছে। চোখের সামনে আসবে অনেক অচেনা চেহারা, নতুন স্বপ্ন আর অনন্ত সম্ভাবনা। মনের গভীরে বাজছে একসঙ্গে আনন্দ, কৌতূহল আর অজানা শঙ্কার মিশ্র সুর। যে স্বপ্নগুলো এতদিন কেবল কল্পনায় ছিল এবার তারা বাস্তবের মাটিতে পা রাখতে যাচ্ছে। আমি অপেক্ষায় আছি সমাজকর্মের এই বন্ধুসুলভ পরিবারে যুক্ত হওয়ার জন্য।”
নবীন বরণ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মশিহুর রহমান বলেন, “বিভাগ থেকে পাশ করা যেমন কঠিন, তার চেয়েও কঠিন সময় অতিক্রম করে তোমরা আজ এখানে এসে পৌঁছিয়েছ। আমাদের বিভাগের নাম গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা—এখানে সাংবাদিকতার আগে যোগাযোগকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কারিকুলাম আমরা এমনভাবে সাজিয়েছি, যাতে শিক্ষার্থীরা মূলত তথ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারে।”
তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে আমাদের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যাংক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জনসংযোগ বিভাগে সফলভাবে কাজ করছে। আমাদের এই কাজকে অর্থবহ করে তুলতে হলে জ্ঞান, নৈতিকতা ও সৃজনশীলতার মাধ্যমে নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করতে হবে। আমি চাই না তোমাদের শিক্ষা কেবল বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকুক; প্রকৃতির নানা উৎস থেকেও তোমরা শিখবে। অ্যাকাডেমিক পরিসরে আবদ্ধ না থেকে জ্ঞানের বিস্তৃত পরিসরে নিজেদের বিচরণ ঘটাতে হবে।”