প্রবাস

কুয়েতে বিষাক্ত মদ তৈরি চক্রের পর্দাফাঁস, বাংলাদেশি হোতা গ্রেপ্তার

কুয়েতে বিষাক্ত মিথানল পানে বেশ কিছু প্রবাসী এশীয় নাগরিকের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নেমে বড় ধরনের সাফল্য পেয়েছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ফার্স্ট ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ ফাহাদ ইউসুফ সৌদ আল-সাবাহ-এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এক অভিযানে একটি আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা এই বিষাক্ত মদ উৎপাদন ও বিক্রি করছিল। চক্রের প্রধান একজন বাংলাদেশি নাগরিক।

অপরাধ তদন্ত বিভাগ, মাদক নিয়ন্ত্রণ বিভাগ, ফরেনসিক বিভাগ এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে গঠিত একটি যৌথ দল এই অভিযান পরিচালনা করে। প্রাথমিক তদন্তের পর সালমানিয়া এলাকায় নেপালি নাগরিক ভুবন লাল তামাং-কে হাতেনাতে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে বিষাক্ত মিথানল উদ্ধার করা হয়েছে এবং সে এই বিষাক্ত পদার্থ তৈরি ও বিক্রির কথা স্বীকার করেছে।

জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে আরো দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে একজন ভারতীয় নাগরিক বিশাল ধানয়াল চৌহান এবং অন্যজন নেপালি নাগরিক নারায়ণ প্রসাদ ভশ্যাল। এরাও এই বিষাক্ত তরল উৎপাদন ও বিতরণের সঙ্গে জড়িত ছিল।

এই চক্রের মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বাংলাদেশি নাগরিক ডেলোরা প্রকাশ দরাজীকে, যাকে পরবর্তীকালে গ্রেপ্তার করা হয়।

এই অভিযান শুধুমাত্র এই চক্রকে গ্রেপ্তারের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। দেশটির বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত ধারাবাহিক অভিযানে অবৈধ মদ উৎপাদন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত আরো ৬৭ জনকে আটক করা হয়েছে। একই সঙ্গে, ছয়টি অবৈধ মদের কারখানা আবিষ্কার করে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং আবাসিক ও শিল্প এলাকায় পরিচালিত আরো চারটি অবৈধ কারখানা সিলগালা করা হয়েছে। এই অভিযানগুলোতে মোট ৩৪ জন পলাতক আসামীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মিথানল মানব স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং এর সেবন মৃত্যুর কারণ হতে পারে। মন্ত্রণালয় মাদক ও নেশাজাতীয় পদার্থ পাচার এবং এর সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। একই সাথে, দেশের নিরাপত্তা এবং জনগণের সুরক্ষাকে ঝুঁকিতে ফেলে এমন যেকোনো কার্যকলাপের বিরুদ্ধে জিরো-টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।