স্থায়ী ক্যাম্পাস, শক্তিশালী ও কার্যকরী প্রশাসন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ চার দাবিতে কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়টির অস্থায়ী ক্যাম্পাস সরকারি গুরুদয়াল কলেজ প্রাঙ্গণে তারা বিক্ষোভ করেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়সহ রেজিস্ট্রার এবং বিভাগীয় কয়েকটি অফিসের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। এসময় উপাচার্য ড. দিলীপ কুমার বড়ুয়া কয়েকজন শিক্ষককে সঙ্গে নিয়ে কথা বলে শিক্ষার্থীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ২৪ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়টির অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টি যাত্রা শুরু করে। ২০২৩ সালের ৩ মার্চ সরকারি গুরুদয়াল কলেজের একটি বহুতল ভবনে অস্থায়ীভাবে কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।
নানা জটিলতায় ভূমি অধিগ্রহণের কাজ আটকে থাকায় এখনো নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। এ রকম পরিস্থিতিতে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে জোড়াতালি দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ফলে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়েও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কয়েকজন বলেন, আমরা একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট হয়ে যা সুবিধা পাওয়া দরকার, তা পাচ্ছি না। আমরা অন্য একজনের হাতে বন্দি অবস্থায় থাকার মতো এখানে আছি। আমাদের প্রয়োজন মতো ল্যাব নেই। শ্রেণিকক্ষ সীমিত। এছাড়া একই ভবনে গুরুদয়াল সরকারি কলেজের কার্যক্রম চলায় তাদের পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ রাখতে হয়। ফলে নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে না। এসব কারণে আমাদের সেমিস্টার শেষ হতে সময় বেশি লাগছে।
তাদরে অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবস্থা খুব নাজুক। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাসহ সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ কিংবা ভূমিকা রাখতে পারছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২য় ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রমজান বলেন, “অতি শিগগিরি আমাদের স্থায়ী ক্যাম্পাস চাই, শক্তিশালি প্রশাসন চাই। আমরা অভ্যন্তরীণ অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি, এসব পূরণ করতে হবে। আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা আজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটডাউন ঘোষণা করছি। আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। কোনো ধরনের ক্লাস, পরীক্ষা, ল্যাব আমরা করব না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নায়লা ইয়াছমীন বলেন, “সরকার পরিবর্তনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ থেমে যায়। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে নতুন করে আবার প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া গেছে। এরপর থেকে আমরা সার্ভেসহ অন্যান্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি যেন দ্রুত ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন করা যায়। ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হওয়ার পর নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজে হাত দেওয়া হবে।”
তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও দ্রুত নিজস্ব ক্যাম্পাসে যেতে চায়। শিক্ষার্থীদের আমরা বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করছি।”