সারা বাংলা

কবরস্থানের সীমানা প্রাচীর নির্মাণেও অনিয়ম!

ঠাকুরগাঁওয়ে কবরস্থানের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এলজিইডি ও এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। ঢালাই করা গ্রেড বিমগুলোতে হাত দিলেই খুলে পড়ছে পলেস্তারা। 

অনিয়মের কথা স্বীকার করে নতুন করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাবুদ হোসেন।

সম্প্রতি, করবস্থানের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে অনিয়মের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। করবস্থানের মতো জায়গাতেও অনিয়ম করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও এলজিইডি কর্তৃপক্ষর কঠোর শাস্তি দাবিসহ বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন নেটিজনরা।

রোববার (২৪ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের কাজীপাড়া এলাকায় একটি কবরস্থানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মিত গ্রেড বিমগুলো ভাঙছেন। তবে তাদের নির্মাণের ঢালাই করা গ্রেড বিমগুলোতে হাত দিলেই খসে পড়ছে পলেস্তারা। সেখানে দাঁড়িয়েছিলেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার উপসহকারী প্রকৌশলী প্রমোদ চন্দ্র রায় ও সার্ভেয়ার মোস্তাফিজুর রহমান। এসময় সাধারণ মানুষের তোপের মুখে পড়েন এই দুই কর্মকর্তা। একপর্যায়ে তারা কাজ বন্ধ করে দেন।

স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে কাজীপাড়া এলাকায় একটি গোরস্থানের দক্ষিণ-পশ্চিম পার্শ্বে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ পান আল আকসা নামে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত বৃহস্পতিবার প্রাচীর ঢালাই দেওয়া হয়। পরদিন ঢালাই খুলে ফেললে পলেস্তারা খসে পড়ছিল। এসময় স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ লোকজন সেই কাজ বন্ধের পাশাপাশি পিলারসহ গ্রেড বিম গুঁড়িয়ে দেয়।

রফিকুল ইসলাম ও সাজ্জাত নামে দুই স্থানীয় যুবক বলেন, “মানুষ মারা গেলে কবরস্থানে মাটি দিবে। অথচ সেখানেও অনিয়ম করছে ঠিকাদার। এরা কি মানুষ না অমানুষ? অবশ্যই এলজিইডির কর্মকর্তাদের যোগসাজসে এই অনিয়মগুলো হচ্ছে। ঠিকাদারের লাইসেন্স বাতিল করা হোক এবং এলজিইডির কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করা হোক।”

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আল আকসার প্রতিনিধি পশিরুল ইসলাম জানান, আগের ঢালাই করা নির্মিত গ্রেড বিমগুলো ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণ করে দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে উপ-সহকারী প্রকৌশলী প্রমোত চন্দ্র রায় জানান, তদারকির অভাবে এই অনিয়ম হয়েছে। ঢালাইয়ে সিমেন্ট কম, বালুর পরিমাণ বেশি ছিল। কাজ করার সময় না জানিয়ে করেছে ঠিকাদার। ঠিকাদারকে পুনরায় ভেঙে আবার নতুন করে গ্রেড বিমগুলোতে ঢালাই দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. মাবুদ হোসেন বলেন, “বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। নিয়ম হলো ঢালাই করার দুই সপ্তাহ পর স্যাটারিং খোলা। কিন্তু ঠিকাদার তা না করে মাত্র একদিন পরেই তা খুলে কাজ শুরু করে দেয়। আমরা ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা পুনরায় কাজ করে দিবেন।”

এ কাজে এলজিইডি কর্তৃপক্ষের অবহেলা আছে কিনা এমন প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান।