মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “প্রাকৃতিকভাবে মাছ পাওয়ার স্থান ধ্বংস হলে মৎস্যজীবীরা মাছ পাবে না। বর্তমানে যেখানে যে পরিমাণ মাছ পাওয়ার কথা, তা পাওয়া যাচ্ছে না। এতে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা বঞ্চিত হচ্ছে। তাই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অমৎস্যজীবীদের কাছে আর জলাশয় ইজারা দেওয়া যাবে না।”
রবিবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ এর মূল্যায়ন, সমাপনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপদেষ্টা এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মৎস্য অধিদপ্তর।
বাওড় ইজারা সমস্যার সমাধানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নেওয়া হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “মৎস্য সপ্তাহ শেষ হলেও, আজ থেকেই শুরু হলো সারা বছরের মৎস্য সপ্তাহ। নতুন উদ্যোমে কাজ শুরু করতে হবে। এ সপ্তাহে যেভাবে মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে, তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।”
তিনি এ বছরের মৎস্য পদক প্রসঙ্গে বলেন, “পদকপ্রাপ্তি বিষয়ে কোনো প্রকার তদবির হয়নি। একাধিক ধাপ অতিক্রম করেই যোগ্যদের পদক প্রদান করা হয়েছে।”
বিএফআরআইয়ের তরুণ বিজ্ঞানীদের প্রশংসা করে উপদেষ্টা বলেন, “অভয়াশ্রম নিয়ে আপনাদের নিবিড় গবেষণা আমাদের অনুপ্রাণিত করছে। গবেষণাকে কেবল কাগজে সীমাবদ্ধ না রেখে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগ করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় শুধু খাদ্য উৎপাদন নয়, এটি একটি বৌদ্ধিক কেন্দ্র (ইন্টেলেকচুয়াল স্পেস)। দেশের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে ইলিশ সরবরাহ করতে হবে, আর আমরা তা করতে সক্ষম হব।”
অনুষ্ঠানে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ বলেন, “ইলিশ উৎপাদন প্রকৃতিনির্ভর। অনেক জায়গায় বাধার কারণে ইলিশ সাগর থেকে নদীতে আসতে পারে না। ফলে ইলিশ আহরণ কম হয়, আর দাম বেড়ে যায়।”
তিনি আরো বলেন, “চিংড়ি চাষ বৃদ্ধির জন্য নির্দিষ্ট জোন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের। অতিথি ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্রা এবং মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের পরিচালক মোহাম্মদ বদরুল হক।
অনুষ্ঠানে মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, মৎস্যজীবী ও সুধীজন অংশ নেন।