ক্যাম্পাস

জবি বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বরখাস্ত, ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফেরদৌসী খাতুনকে নানা অভিযোগের ভিত্তিতে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে তার ক্যাম্পাসে প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের একটি ক্লাস নিয়ে দুইটি ক্লাসের উপস্থিতি দেখানো, ধারাবাহিক মূল্যায়ন নম্বর প্রদানে স্বেচ্ছাচারিতা, বিভাগের চেয়ারম্যান, রেজিস্ট্রার দপ্তর ও উপাচার্য দপ্তরের কর্মকর্তাদের হুমকি প্রদান এবং অশালীন ভাষায় কটূক্তি করার মতো অসদাচরণ ও নৈতিকস্থলনের কারণে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফেরদৌসী খাতুনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

আদেশে আরো বলা হয়েছে, এ ধরনের আচরণ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ এর ৪৪(৬) ধারা এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর ১২(১) বিধির আলোকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই মঙ্গলবার থেকেই তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত এবং ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হলো।

ড. ফেরদৌসী খাতুনের বিরুদ্ধে নিয়োগ ও পদোন্নতিতে অনিয়মসহ নানা অভিযোগ ওঠে। অনার্স-মাস্টার্সে দ্বিতীয় শ্রেণি পাওয়া সত্ত্বেও তিনি ২০১২ সালে প্রভাষক পদে নিয়োগ পান, যদিও বিজ্ঞপ্তিতে অন্তত একটি পর্যায়ে প্রথম শ্রেণি থাকার শর্ত ছিল। দুই বছর পূর্ণ না করেই ২০১৪ সালে তিনি সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান, তাও আবার বিভাগীয় অনুমতি ছাড়াই। গবেষণা প্রবন্ধে ভিন্ন নামে (ফেরদৌসী হক) প্রকাশনা করার ঘটনাও সামনে আসে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়ের অভিযোগ, তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত ক্লাস নেন না, ক্লাসে অপ্রাসঙ্গিক কথা বলেন, পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে স্বেচ্ছাচারিতা করেন এবং নম্বর দেন ইচ্ছামতো। ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্বে থেকেও প্রশ্নপত্র বাইরে নেওয়া, সহকর্মী শিক্ষকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, হুমকি-ধামকি ও গালিগালাজ করেন তিনি।

এছাড়া সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ না করা, ক্ষমতার দম্ভ প্রদর্শন, শিক্ষকদের নিরাপত্তাহীনতায় ফেলা এবং সাংবাদিকদের সঙ্গেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব কারণে বিভাগীয় শিক্ষকরা একাডেমিক কার্যক্রম থেকে তাকে প্রত্যাহারের দাবি তুলেছিলেন।