সারা বাংলা

এক ভাইয়ের চোখ তুলে নিল দুই ভাই, ভাইরাল ভিডিও নিয়ে যা জানা গেল

বরিশালের মুলাদীতে পারিবারিক বিরোধের জেরে দুই ভাই লোকজন নিয়ে আরেক ভাইয়ের দুই চোখ তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৭ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘটনাটি গত ২২ আগস্টের। ভুক্তভোগীরা নাম রিপন ব্যাপারী। অভিযুক্ত দুই ভাই হলেন- রোকন ব্যাপারী ও স্বপন ব্যাপারী। তারা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর গ্রামের আর্শেদ ব্যাপারীর ছেলে।

এ ঘটনায় ২৫ আগস্ট ভুক্তভোগীর স্ত্রী নূরজাহান বেগম বাদী হয়ে অভিযুক্ত দুই ভাইসহ আটজনকে আসামি করে বরিশাল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে মুলাদী থানাকে প্রাথমিক তথ্য প্রতিবেদন (এফআইআর) করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নাজিম উদ্দিন পান্না।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, একজন আঙুল দিয়ে রিপনের বাম চোখ তোলার চেষ্টা করছেন। এ সময় আরেকজন রিপনের পা ও শরীর চেপে ধরে আছেন। ঘটনার সময় রিপনের তুলে নেওয়া চোখ এক নারীর হাতে দেখা যায়। একই সময় আরেক নারীকে রিপনের মুখমণ্ডলে মারধর করতে দেখা গেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন রিপনের বাবা।

আহত রিপনের ছেলে শাহিন ব্যাপারী জানান, তার মেজ চাচা রোকন ব্যাপারীর কাছে টাকা ও স্বর্ণালংকার গচ্ছিত রেখেছিলেন তার বাবা। এছাড়া জায়গা-জমি নিয়েও কিছু বিরোধ ছিল। ওই বিরোধ মেটাতে চাচারা তার বাবাকে সংবাদ দিয়ে ঢাকা থেকে বাড়িতে ডেকে নেন। গত শুক্রবার বিকেলে তার বাবা রিপন ব্যাপারী বাড়িতে পৌঁছালে চাচাদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। বিরোধ মেটাতে শনিবার সকালে এলাকায় সালিশ বৈঠকের কথা ছিল। কিন্তু রাতে তার দুই চাচা লোকজন নিয়ে রিপন ব্যাপারীর চোখ তুলে নিয়েছেন।

শাহিন ব্যাপারী অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ভিডিওতে বাবার বুকে চেপে যাকে আঙুল দিয়ে বাম চোখ তুলে নিতে দেখা যাচ্ছে, তিনি রোকন ব্যাপারী। আর পা চেপে ধরা ব্যক্তি স্বপন ব্যাপারী। যার হাতে তুলে নেওয়া চোখ ছিল, তিনি রোকন ব্যাপারীর স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম। মারধর করেছেন তার মেয়ে সুবর্ণা আক্তার।’’

শাহিন আরো বলেন, ‘‘চোখ তুলে নেওয়ার পর বাবাকে স্থানীয় লোকজন প্রথমে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মঙ্গলবার সকালে তাকে ঢাকায় জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।’’

মুলাদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের দুটি দল নাজিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে।’’