সারা বাংলা

চা বাগানের ছায়াবৃক্ষ কেটে নেওয়ার অভিযোগ

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ডানকান ব্রাদার্সের শমশেরনগর চা বাগান থেকে বড় আকারের শেড ট্রি বা ছায়াবৃক্ষ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মরা গাছের পাশাপাশি জীবিত গাছ কেটে নেওয়ায় চা গাছ ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে জানিয়েছেন বাগানের শ্রমিকরা।

বাগান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সামনে দুর্গাপূজা, জ্বালানির কাঠের প্রয়োজন থাকায় শ্রমিকরা মরা গাছ কেটে নিচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার শমশেরনগর-পীরেরবাজার সড়কের পাশে শ্মশানঘাট সংলগ্ন শমশেরনগর চা বাগানের সেকশন থেকে প্রকাশ্য দিবালোকে দুইটি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। বাগান পঞ্চায়েত সর্দার আব্দুল আহাদ মিয়া কয়েকজন চা শ্রমিক দিয়ে গাছগুলো কাটান। বন বিভাগের অনুমতি ছাড়াই গাছগুলো কেটে টুকরা করে চা বাগানের ট্রাক্টর যোগে বাগানের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। দুইটি গাছই ছিল বড় আকৃতির ও জীবিত। এই গাছ চা গাছের ছায়াদানকারী বৃক্ষ হিসাবে ভূমিকা রাখছিল।

গাছ কাটার বিষয়ে আব্দুল আহাদ মিয়া বলেন, “চা বাগান ব্যবস্থাপকের অনুমতি নিয়ে জ্বালানির জন্য গাছগুলো কেটে নেওয়া হয়েছে।” 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চা শ্রমিক জানান, একটি মহল চা বাগানের গাছ রাতের আঁধারে কেটে নিচ্ছে। মরা গাছের পাশাপাশি জীবিত গাছ কেটে কাঠ হিসেবে বাজারে বিক্রি করছেন তারা। বাগানের সেকশনগুলো বৃক্ষশূন্য হচ্ছে। যা চা উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

বাগান সংশ্লিষ্টদের তথ্য জানা গেছে, শমশেরনগরের ফাঁড়ি দেওছড়া, ডবলছড়া, কানিহাটি চা বাগানসহ বিভিন্ন চা বাগানে পুরনো ও বড় আকৃতির গাছ চুরি হচ্ছে। সেকশনের পুরনো কড়ই, কাঁঠালসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে নিচ্ছে একটি চক্র। এই গাছগুলো চা গাছের ছায়াবৃক্ষ হিসেবে পরিচিত। এই বড় আকৃতির গাছ চা বাগানকে প্রখর রোদের কবল থেকে রক্ষা করে। পাশাপাশি মাটির ক্ষয় রোধে সহায়তা করে। এজন্য চায়ের টিলাগুলো বৃক্ষরাজিতে ভরপুর থাকে। 

শ্রমিক নেতা সিতারাম বিন বলেন, “গাছ চুরি হয়ে যাওয়ায় টিলাগুলো বৃক্ষ শূন্য হয়ে পড়ছে। ছায়া না পেলে চা গাছের ক্ষতি হবে। পাশাপাশি বাগান থেকে কাঁচা চা পাতা চুরি হচ্ছে। এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে আমরা বাগানের ব্যবস্থাপককে জানিয়েছি।”

শমশেরনগর চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক এম.বি. সাজ্জাদুর হক গাছ কাটার বিষয়ে বলেন, “শ্রমিকরা জ্বালানি কাঠের জন্য মরা গাছ কাটছেন। সামনে দুর্গাপূজা আসছে, তাদের জ্বালানি কাঠের প্রয়োজন থাকায় গাছ কেটে নিচ্ছেন। জীবিত ও বড় সাইজের গাছ কাটলে চা গাছ ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ক্ষতি হবে। জীবিত ও বড় গাছ কাটা হচ্ছে কি না আমরা বিষয়টি  খতিয়ে দেখব।”

শমশেরনগর চা বাগানের ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন বলেন, “শ্রমিকরা জ্বালানি কাঠের জন্য মরা গাছ কাটছেন। তাদের জ্বালানি কাঠের প্রয়োজন থাকায় মরা গাছ কেটে নিচ্ছেন।”

রাজকান্দি বনরেঞ্জ কর্মকর্তা জুয়েল রানা বলেন, “চা বাগান থেকে গাছ কাটতে হলে বনবিভাগের অনুমতি প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমরা খোঁজ নেব।”