পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায় এক রাজনৈতিক সমাবেশে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ৩১ জন। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। খবর সিনহুয়ার।
সরকারি কর্মকর্তা হামজা শাফায়াত জানান, মঙ্গলবার বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টির (বিএনপি) নেতা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সরদার আতাউল্লাহ মেঙ্গলের মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। এ উপলক্ষে কোয়েটায় একটি স্মরণসভা আয়োজন করা হয়। সেখানে বিএনপির শত শত সদস্য জড়ো হয়েছিল। সমাবেশ শেষে অনেকেই বেরিয়ে আসেন। সে সময়ে কাছের পার্কিং লটে হঠাৎ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
পুলিশের এক কমর্কর্তা আতহার রশিদ বলেন, “বিস্ফোরণটি আত্মঘাতী বোমা হামলা বলেই মনে করা হচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।”
এখনো কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
এদিকে, মঙ্গলবার সকালে খাইবার পাখতুনখোয়া শহরের বান্নুতেও একটি আধাসামরিক সদর দপ্তরে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর ৬ সদস্য এবং ৬ জন সন্ত্রাসী সহ মোট ১২ নিহত হন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সরকারি কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী বিস্ফোরক ভর্তি গাড়িটি এফসি ক্যাম্পের গেটে ঢুকিয়ে দেয়। এরপর আরো পাঁচজন আত্মঘাতী হামলাকারী প্রবেশ করে।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, পরবর্তীতে ১২ ঘণ্টা ধরে গোলাগুলি হয় এবং শেষ পর্যন্ত ছয় হামলাকারী নিহত হলে অভিযান শেষ হয়।
বেলুচিস্তান পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় প্রদেশ এবং প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ হলেও দরিদ্রতম। এছাড়া মানব উন্নয়ন সূচকের স্কোরকার্ডেও নিচের দিকে থাকে।
পাকিস্তানি বাহিনী এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বেলুচিস্তানে বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং ২০২৪ সালে এই অঞ্চলে সহিংসতা তীব্রভাবে বেড়েছে, যার মধ্যে ৭৮২ জন নিহত হয়েছে।
গত মার্চ মাসে, বিচ্ছিন্নতাবাদী বেলুচ লিবারেশন আর্মি প্রদেশটিতে একটি ট্রেন দখল করে। তিন দিনের অবরোধে শত শত যাত্রীকে জিম্মি করে এবং কর্তব্যরত নিরাপত্তা বাহিনীকে হত্যা করে।
এএফপির পরিসংখ্যান অনুসারে, ১ জানুয়ারি থেকে বেলুচিস্তান ও পার্শ্ববর্তী প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বিরুদ্ধে লড়াইরত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতায় ৪৩০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।