সারা বাংলা

ফাঁকা পড়ে আছে বিএনপির মঞ্চ, দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) যে মঞ্চে কর্মসূচি হওয়ার কথা ছিল, সেটি এখন ফাঁকা পড়ে আছে। মঞ্চের পেছনে বসে রয়েছে পুলিশ। দলটির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পর প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করায় কর্মসূচি বাতিল হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলা সদরে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরীফ উদ্দীন এবং উপজেলা বিএনপির সদস্য সুলতানুল ইসলাম তারেকের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় এক পক্ষের নেতা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।

বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলা সদরে একই স্থানে কর্মসূচি ঘোষণা দেয় দুই গ্রুপ। এ নিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বিকেল ৪টার দিকে ইট নিক্ষেপের মাধ্যমে সংঘর্ষে জড়ায় পক্ষ দুইটি। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলতে থাকে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো উপজেলা সদরে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষে শরীফ উদ্দীনের গ্রুপের অন্তত সাতজন আহত হন। তাদের মধ্যে উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুদ রানা এবং পৌর যুবদলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান বিপ্লব রয়েছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আহমেদ। বুধবার দুপুরে উপজেলা সদরে সেনাবাহিনী টহল দেয়।

সংঘর্ষ কেন হলো জানতে চাইলে সুলতানুল ইসলাম তারেক গ্রুপের নেতা ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান জানান, ‍দুই পক্ষ যদি আলাদা জায়গায় অনুষ্ঠান করত তবে কোনো ঝামেলা হতো না। শরীফ উদ্দীনের গ্রুপ উপজেলা কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠান করতে চেয়েছিল। এ নিয়ে তারা ইউএনও অফিসে আপত্তি জানান। পরে জানতে পারেন, শরীফ উদ্দীনের অনুসারীরা তাদের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে এবং চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেছে। এরপরই সংঘর্ষ শুরু হয়।

শরীফ উদ্দীনের গ্রুপের সমর্থক ও উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক বেদার উদ্দিন বলেন, প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে তারা মঞ্চ তৈরি করছিলেন। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) কাজ চলার সময় সুলতানুলের পক্ষ এসে বাধা দেয়। মঙ্গলবারও তারা একইভাবে বাধা দেয় এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে তাদের কয়েকজন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

ঘটনার পর রাতেই উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক বেদার উদ্দিন বাদী হয়ে গোদাগাড়ী থানায় মামলা করেন। মামলায় পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমানকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মামালায় আরো ৩৫ জনের নাম উল্লেখসহ ৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

গোদাগাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আমিন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অপতৎপরতা ঠেকাতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে আছে। দায়ের করা মামলাটি রেকর্ড হয়েছে এবং তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।