কখনো অভিনেতা, কখনো পরিচালক, কখনো গান গেয়ে দর্শকদের তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ওপার বাংলার অনির্বাণ ভট্টাচার্য। এরই মাঝে ‘হুলিগানইজম’ নামে গানের দল প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। এ ব্র্যান্ডের নতুন গান ‘তুমি মস্তি করবে জানি’।
কয়েক দিন আগে কনসার্টে গানটি গাওয়ার পর তা ভাইরাল হয়। কারণ এ গানে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির তিন ঘোষকে নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন। কেবল তাই নয়, ‘নরেন্দ্র মোদির পেনশন-টেনশন’, ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ নিয়েও স্যাটায়ার করেছেন এই গায়ক।
এরপর থেকে পশ্চিমবঙ্গে হইচই চলছে অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে নিয়ে। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিনেতা-বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ। ক্ষমা চাওয়াও দাবি জানান তিনি। এবার সনাতন ধর্মকে অসম্মানের অভিযোগে কলকাতার লালবাজার থানায় অভিযোগ করেছে বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি। অনিবার্ণ ভট্টাচার্য ছাড়াও তার ব্যান্ডের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ভারতীয় একটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, ব্যান্ডের প্রচারের জন্য ধর্মবিশ্বাস ও অনুভূতিকে আঘাত করা হয়েছে অনির্বাণদের গানে। পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে অনির্বাণদের বিরুদ্ধে আদালতে ব্যবস্থা গ্রহণেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিজেপি।
অনির্বাণ তার গানে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির তিন ঘোষকে নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন। এই তিন ঘোষ হলেন তৃণমূল, সিপিএম ও বিজেপির তিন নেতা কুণাল ঘোষ, শতরূপ ঘোষ ও দিলীপ ঘোষ। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায় অনির্বাণ গাইছেন—“এসব গান-বাজনা ছাড়, চল প্রোমোটারি করি, বড় গাড়ি চড়ি/ইলেকশানের মেজাজ বুঝে দলটা বদল করি/এই আমাদের দোষ/গানবাজনা করতে এসে এসব কথা বললে/রেগে যাবে কুণাল ঘোষ।”
এই তিন ঘোষও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তবে বিজেপির প্রবীণ নেতা দিলীপ ঘোষ ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, “বাকস্বাধীনতা তো সকলের আছে, তবে শালীনতার মাত্রা যেন না ছাড়ায়। রসিকতা যেন শালীনতার বাইরে না যায়, কিংবা কারো আদর্শ বা নীতিতে আঘাত না করে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত। শুধু জনপ্রিয়তা, মনোরঞ্জনের জন্য যাকে যা ইচ্ছে বলার অধিকার কারো নেই। সে বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।”
বিজেপি নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ হালকাভাবে মন্তব্য করেছেন। তার ভাষায়, “আমি কেন রাগ করব? বরং আমি মজা পেয়েছি। এই ধরনের গান শুনতে আমার ভালো লেগেছে। ভালো থেকো, অনির্বাণ।”
একইভাবে সিপিআই(এম)-এর শতরূপ ঘোষও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি খুশি কারণ আমি সেই গানের একটি চরিত্র ছিলাম। এটা শুনে আমার ভালো লেগেছে।”
অনির্বাণ ভট্টাচার্য ও তার গান নিয়ে যখন পশ্চিমবঙ্গে তোলপাড় চলছে, তখন নীরব ভূমিকায় রয়েছেন এই গায়ক। এ নিয়ে এখনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি তিনি।