সারা বাংলা

সাতক্ষীরায় ৩ জনকে কুপিয়ে জখম: গণঅধিকার পরিষদ নেতার নামে মামলা

সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা শাহিনুর কবিরসহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি প্রার্থী হাসানুর রহমান হাসানসহ ১০ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। 

রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে আহত শাহিনুর কবিরের বাবা লিয়াকত আলী গাজী বাদী হয়ে পাটকেলঘাটা থানায় মামলা করেন। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার পাটকেলঘাটা থানার তৈলকুপী ভাঙ্গারিঘাট এলাকায় তিনজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এ হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল।

মামলা দায়েরের তথ্য জানান পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান। তিনি বলেন, ‘‘হামলার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় আজ (রবিবার) মামলাও হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে।’’

মামলার আসামিরা হলেন, তালা উপজেলার তৈলকুপী গ্রামের মোসলেম সরদারের ছেলে গণঅধিকার পরিষদ নেতা হাসানুর রহমান হাসান ও মিজানুর রহমান মিজান, একই এলাকার মৃত লোকমান বিশ্বাসের ছেলে মোফাজ্জেল বিশ্বাস, মোকছেদ সরদারের ছেলে হেল্লাল সরদার, মৃত নাজের গাজীর ছেলে জিয়ারুল গাজী, যুগীপুকুর এলাকার মোমিনের ছেলে রবিউল ইসলাম, মাতব্বর সরদারের ছেলে মোসলেম সরদার ও মোকছেদ সরদার, তৈলকুপী গ্রামের রেজাউল সরদারের ছেলে আল আমিন ও আল মামুন।

প্রধান আসামি হাসানুর রহমান হাসান জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি প্রার্থী। তিনি এর আগে আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হকের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।

আহতরা হলেন, তৈলকুপী গ্রামের লিয়াকত আলী গাজীর ছেলে সরুলিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহিনুর কবির, শাহিনুরের ছোট ভাই সাইফুল্লাহ ও ভাবি পারুল সুলতানা।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) মাছের ঘের থেকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে জমি জায়গা নিয়ে পূর্ব-বিরোধের জের ধরে তৈলকুপী ভাঙ্গারিঘাট এলাকায় শাহিনুর কবিরকে লোহার রড, হাতুড়ি, দা, জিআই পাইপ ও বাঁশের লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হাসানসহ কয়েকজন হামলা চালায়। এ সময় শাহিনুর দোকানে আশ্রয় নিলে তারা শাটার ভেঙে তাকে বেধড়ক মারধর করে। শাহিনুর কবিরের তার ছোট ভাই সাইফুল্লাহ ও ভাবি পারুল সুলতানা ছুটে এলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়। ধারালো অস্ত্রের কোপে সাইফুল্লাহ গুরুতর জখম হন। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে সেলাই দিতে হয়েছে। তারা পারুল সুলতানাকেও পিটিয়ে জখম করে। আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়।

শাহিনুর করিব অভিযোগ করে বলেন, ‘‘২০২৩ সালে বিএনপির দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কারণে সাবেক মন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক এবং তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ঘোষ সনৎ কুমারকে দিয়ে র‌্যাবের মাধ্যমে আমাকে গ্রেপ্তার করান এই হাসান। সেই সময় আমাকে দীর্ঘদিন জেল খাটতে হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে সরকারি প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন হাসান।’’

হাসানুর রহমান হাসান বলেন, ‘‘জমির কাগজ আমাদের রয়েছে কিন্তু তারা জোর করে দখল করে রেখেছেন।’’ কুপিয়ে জখম ঠিক হয়েছে কি-না, এমন প্রশ্ন করলে তিনি সেটা এড়িয়ে যান। এদিকে, হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কামরুজ্জামান ভুট্টো বলেন, ‘‘এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না। আমরা অবিলম্বে হামলার সঙ্গে জড়িত আসামিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’