সারা বাংলা

ডাকসু নির্বাচনে জয়পুরহাটের মহিউদ্দিনের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন জয়পুরহাটের কৃতী সন্তান মুহা. মহিউদ্দীন খান। তার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসী ও তার সাবেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

মুহা. মহিউদ্দীন খান জয়পুরহাট সদর উপজেলার বম্বু ইউনিয়নের হানাইল গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল মাবুদ খানের কনিষ্ঠ ছেলে। তিনি হানাইল নোমানীয়া কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিলেন। 

হানাইল গ্রামের বাসিন্দা ও হানাইল নোমানীয়া কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, মহিউদ্দীন খান ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী, নম্র ও ভদ্র ছিলেন। 

হানাইল নোমানীয়া কামিল মাদ্রাসার প্রাক্তন কোনো শিক্ষার্থী এই প্রথম ডাকসু নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ পদে জয়ী হয়েছেন। জয়পুরহাট জেলা থেকেও এই প্রথম কেউ ডাকসুতে নির্বাচিত হলেন কি না, তা নিয়েও চলছে আলোচনা। 

মুহা. মহিউদ্দীন খান হানাইল নোমানীয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে ২০১৬ সালে বিজ্ঞান বিভাগে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। একই মাদ্রাসা থেকে ২০১৮ সালে সাধারণ বিভাগে আলিম পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পান তিনি। সে বছর আলিম পরীক্ষায় জয়পুরহাট জেলার মধ্যে একমাত্র জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ছিলেন মহিউদ্দিন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-২০১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মুহা. মহিউদ্দীন খান। ডাকসু নির্বাচনে তিনি ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে বিপুল ভোটে এজিএস নির্বাচিত হয়েছেন। 

হানাইল নোমানীয়া কামিল মাদ্রাসায় মুহা. মহিউদ্দীন খানের সহপাঠী মাকছুরা আখতার মিম বলেছেন, মহিউদ্দীন ও আমি প্রথম শ্রেণি থেকে আলিম পর্যন্ত সহপাঠী ছিলাম। সে ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী, নম্র ও ভদ্র। এজিএস প্রার্থী হওয়ার পর থেকে আমাদের বিশ্বাস ছিল, জিতবে সে। আমাদের হানাইল মাদ্রাসার ২০১৬ ব্যাচের একটি অনলাইন গ্রুপ আছে। আমরা মঙ্গলবার নির্বাচনের দিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সবাই গ্রুপে খোঁজ-খবর নিচ্ছিলাম। সহপাঠীর জন্য আমাদের মধ্যে দারুণ উত্তেজনা কাজ করছিল। আমরা কাঙ্ক্ষিত ফল পেয়েছি। মহিউদ্দীন এজিএস নির্বাচি হওয়ায় আমরা ২০১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা গর্বিত। তার সততা, সাংগঠনিক দক্ষতা ও সক্রিয় ভূমিকা তাকে এজিএস পদে বিজয়ী হতে সহায়তা করেছে বলে মনে করছি।

হানাইল গ্রামের বাসিন্দা মিলন হোসেন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্বাচিত এজিএস মুহা. মহিউদ্দীন খান আমাদের গ্রামের সন্তান। আমরা তার এমন কৃতিত্বে গর্বিত। 

হানাইল নোমানীয়া কামিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মো. ফজলুল হক বলেন, মহিউদ্দীন আমার ছাত্র ছিল। সে অত্যন্ত মেধাবী। ডাকসুতে জয়ী হয়ে সে প্রমাণ করেছে যে, মফস্বলের ছাত্ররাও পরিশ্রম ও মেধার মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে জায়গা করে নিতে পারে।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল হাকিম বলেছেন, মুহা. মহিউদ্দীন খান আমাদের মাদ্রাসার প্রাক্তন শিক্ষার্থী। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের এজিএস নির্বাচিত হয়েছে। আমরা শিক্ষকেরা সবাই তার এমন কৃতিত্বে গর্বিত। হানাইল নোমানীয়া কামিল মাদ্রাসার প্রাক্তন কোনো শিক্ষার্থী এই প্রথম ডাকসু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এজিএস পদে বিজয়ের মুকুট অর্জন করেছেন। সম্ভবত জয়পুরহাট জেলার ইতিহাসেও প্রথম এটি।