রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষকদের ওপর হামলা এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষক সমাজ (সাদা দল)।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে চবি শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. শাহাদাত হোছাইন ও যুগ্ম-আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাবি শিক্ষক সমাজের ওপর যে বর্বরোচিত হামলা ও অমানবিক আচরণের ঘটনা ঘটেছে, তা বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান, রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আলম মাসুদসহ একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে শারীরিক নির্যাতন, অর্থ ছিনতাই এবং ৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ করে রাখার মতো জঘন্য ঘটনা কোনো সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। চবি সাদা দল এই অন্যায়, অগণতান্ত্রিক ও অসভ্যোচিত কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আজকের এই অপ্রত্যাশিত ঘটনা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন বানচাল করার একটি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত থাকা এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরো বিলম্বিত করে শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার এ প্রবণতা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। শিক্ষাঙ্গন জ্ঞানচর্চার পবিত্র ক্ষেত্র, কোনোভাবেই সহিংসতার আখড়া হতে পারে না। আজকের ঘটনা বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মর্যাদা ও ঐতিহ্যকে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেছে।
পোষ্য কোটা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। আমরা মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে মেধাই হওয়া উচিত প্রধান মানদণ্ড। তবে যেকোনো মতবিরোধের সমাধান হতে হবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে, সহিংসতা দিয়ে নয়। আমরা শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানাই, কিন্তু সহিংসতা ও নৈরাজ্যের কোনো প্রকার সমর্থন করি না।
হামলার ঘটনায় শাস্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আমরা উচ্চ আদালতের বিচারপতির নেতৃত্বে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে শিক্ষকদের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আবেদন জানাই যেন রাবি ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয় এবং শিক্ষাঙ্গনে সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে চবি শিক্ষক সমাজের (সাদা দল) ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক শাহাদাত হোছাইন বলেন, “গতকাল (শনিবার) রাবি শিক্ষকদের উপর যে অমানবিক হামলা হয়েছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। উদ্ভুত এই পরিস্থিতি আসন্ন রাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রও হতে পারে। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে মেধাই হওয়া উচিত প্রধান মানদণ্ড। শিক্ষার্থীরা যে কোনো দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন করতে পারে। তবে তা হওয়া উচিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়, সহিংসতায় নয়।”
তিনি আরো বলেন, “এ ঘটনায় একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা হোক। একইসঙ্গে, শিক্ষকদের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাই।”