যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেনে ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারার ওপর হামলার ঘটনাটি অন্তর্বর্তী সরকারের চরম ব্যর্থতা দাবি করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দলটির ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে এনসিপি ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স থেকে গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই বিপ্লবের সময় যারা জীবনবাজি রেখে লড়েছিলেন, তাদের প্রতি প্রতিশোধপরায়ণ হামলাকারীদের ক্ষোভ আজও থামেনি। আখতার হোসেনকে খুনী হাসিনা সরকার জুলাইতে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন চালায়। যিনি গণআন্দোলনের জন্য নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলেছিলেন, আজও সেই সংগ্রামের মূল্য দিতে হচ্ছে। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের চরম ব্যর্থতা।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, আখতার হোসেন ও তাসনিম জারার সঙ্গে হওয়া এই হামলার সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যান্য সফরসঙ্গীরাও ছিলেন এবং তারাও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের তোপের মুখে পড়েন, কিন্ত এই হামলার প্রধান লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে মূলত এনসিপি নেতৃবৃন্দকে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, সরকারি আমন্ত্রণে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সফরে অংশগ্রহণকারী জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা আখতার হোসেন ও তাসনিম জারার ওপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমর্থক সন্ত্রাসীরা ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনা শুধু রাজনৈতিক সহিংসতার বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মর্যাদা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার চরম ব্যর্থতার উদাহরণ।
এ ঘটনার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে অবিলম্বে দৃঢ় পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা প্রশ্ন রাখছি- যদি সরকারি সফরের অংশগ্রহণকারীরা ন্যূনতম নিরাপত্তা না পান, তবে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি কনস্যুলেট ও দূতাবাসগুলোর অস্তিত্বের যৌক্তিকতা কোথায়? তারা কাদের স্বার্থে কাজ করছে, আর কেন এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না?
সংগঠনটি বিবৃতিতে আরো জানায়, আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে এ বিষয়ে অবিলম্বে দৃঢ় পদক্ষেপের দাবি জানাই। আমাদের সুস্পষ্ট তিনটি দাবি হলো-
* বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার এবং নিউ-ইয়র্ক শহরের সরকার ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সরাসরি অভিযোগ করতে হবে।
* নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলসহ সম্পূর্ণ ফরেন সার্ভিস টিমকে অবিলম্বে চাকরিচ্যুত করতে হবে।
* সফরের পরবর্তী অংশের জন্য প্রত্যেক সফররত নেতাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এনসিপি ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স আরো বলেছে, বিদেশি মাটিতে আওয়ামী লীগের এধরণের সন্ত্রাসী হামলা শুধু প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তার জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের মর্যাদা ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্যও হুমকিস্বরূপ। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করছি।