গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার দড়ি জাংগালিয়া গ্রামের ক্যান্সার আক্রান্ত যুবক মো. ছরোয়ারের উপার্যনের ভরসা ছিল ছোট একটি টোন দোকান। সম্প্রতি চোররা সেই দোকানের তালা ভেঙে সব মালপত্র চুরি করে নিয়েছে। তার অসহায়ত্বের তথ্য জানতে পেরে পাশে দাঁড়িয়েছে প্রশাসন।
তিন বছর ধরে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ছেন ত্রিশোর্ধ ছরোয়ার। চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে প্রায় নিঃস্ব হয়েছেন তার বাবা আলাউদ্দিন মোড়ল। সংসার ও সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সম্প্রতি বাড়ির পাশে একটি ছোট দোকান চালু করেছিলেন তিনি।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর চিকিৎসা শেষে ঢাকা থেকে ফিরে ছরোয়ার বিশ্রামে ছিলেন। পরদিন সকালে গিয়ে দেখেন দোকানের তালা ভেঙে সব মালামাল চুরি হয়ে গেছে। অসহায় এই পরিস্থিতি তুলে ধরে ছরোয়ার ফেসবুক লাইভে আসেন।
লাইভে ছারোয়ার বলেন, “আমি একজন ক্যান্সার রোগী। সংসার চালাতে টোনের দোকান দিয়েছিলাম। এলাকার মাদকাশক্তরা আমার দোকানের তালা ভেঙে সবকিছু নিয়ে গেছে।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই ভিডিও মুহূর্তেই ভাইরাল হয়। বিষয়টি নজরে আসে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ.টি.এম. কামরুল ইসলামের। তিনি বুধবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ছরোয়ারের দোকানে গিয়ে খোঁজখবর নেন এবং সবসময় পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
ইউএনও বলেন, “উপজেলা সমাজসেবার মাধ্যমে সরকারি অনুদানসহ যেসব সহায়তা দেওয়া যায়, সেসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ সময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকিয়া সারওয়ার লিমা ও সাংবাদিক তৈয়বুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
জাংগালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শহিদুল্লা শহিদ বলেন, “মানবিক উদ্যোগ সমাজকে বদলে দেয়। প্রশাসন যেমন ছরোয়ারের পাশে দাঁড়িয়েছে, তেমনি আমাদের সবার উচিত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো।”
গাজীপুর জজ কোর্টের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট গাজী মোতাশেম আজমল সোহেল বলেন, “প্রশাসনের এ ধরনের উদ্যোগ অসহায় মানুষের মনোবল বাড়িয়ে দেয়। এর মাধ্যমে সমাজে একটি বড় বার্তা পৌঁছে যায় যে, রাষ্ট্র ও সমাজ অসহায় মানুষের পাশে আছে।”
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাতে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন বলেন, “কেউ মামলা করেননি। বিষয়টি মানবিক দিক থেকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি এবং খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”