গাইবান্ধার ফুলছড়িতে ভিন্ন ধর্মের তরুণ-তরুণীর একটি বিয়ে ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিয়ের পর থেকে ঢাকায় সংসার পাতা এই দম্পতি রবিবার (৫ অক্টোবর) প্রথমবারের মতো গ্রামে আসেন।
উপজেলার উদাখালি ইউনিয়নের দক্ষিণ উদাখালি গ্রামে স্বামী লিটন চন্দ্র সরকারের (২৮) বাড়ি। তার গ্রামেই তাদের নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়, যা শেষপর্যন্ত থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছে।
লিটনের স্ত্রী সুরজিনা বেগম (২২)। তার বাড়ি রংপুর জেলার গংগাচড়ার ভোটকা গ্রামে। বিয়ের আগে থেকে লিটন ও সুরজিনা ঢাকায় থাকতেন। তাদের প্রেম ছিল, প্রেম থেকে পরিণয়। সংসার পেতেছিলেন তারা।
লিটন তার স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামে এলে তাদের বিয়ের বিষয়ে জানাজানি হয়; গ্রামবাসীর আপত্তির মুখে পড়েন তারা। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় এবং জামায়াতের লোকজন এই বিয়ের বিরোধিতা করায় উত্তেজনা তৈরি হয়। লিটনের বাড়ি ঘিরে লোকজন জড়ো হয়; আসেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ।
উদাখালি ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য খাজা মন্ডল বলেন, ‘‘ছেলে এবং মেয়ে গতকালই এলাকায় এসেছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, চলতি বছর গাইবান্ধা আদালতে তারা বিয়ে করেছেন। তবে, তারও এক বছর আগে থেকে তারা ঢাকায় ছিলেন।”
সুরজিনা বেগম বলেন, ‘‘আমরা স্বেচ্ছায় একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেছি, আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা নেই।’’
সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের কথা অনুযায়ী, আমি হিন্দু ছেলে বিয়ে করে ভুল করেছি। ঠিক আছে, আমি বাবার বাড়ি চলে যাব। কিন্তু আমার স্বামী লিটনের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেটার নিশ্চয়তা দিতে হবে। তার কাছে আমার কোনো আর্থিক দাবি নেই। সেই সঙ্গে তার কাছে অন্য কেউ যেন কোনো টাকা-পয়সা দাবি না করে, সেই নিশ্চয়তাও দিতে হবে।’’
লিটন বলেন, ‘‘আমরা আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করেছি। আমার কাছে সব ডকুমেন্ট আছে। তার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক।’’
ফুলছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাজহারুল ইসলাম রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, ‘‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তারা এফিডেভিটের মাধ্যমে আদালতে বিয়ে করেছেন। তারা উভয়ই সাবালক।”
“গতকাল (৫ অক্টোবর) তারা বাড়িতে এলে ঘটনাটি এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হয়। সেখানে কিছুটা উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মেয়ের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে আমাদের হেফাজতে রেখেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’’- যোগ করেন তিনি।