রাজনীতি

পিআর আন্দোলনের লক্ষ্য নির্বাচন বিলম্বিত করা: মির্জা ফখরুল

সংস্কার ক‌মিশন নয়, বরং দু’-একটি রাজ‌নৈ‌তিক দল পিআর পদ্ধ‌তির কথা ব‌লে আন্দোলন ক‌রে নির্বাচন বিল‌ম্বিত করার চেষ্টা কর‌ছে ব‌লে অভিযোগ ক‌রে‌ছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রবিবার (১২ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ অভিযোগ করেন তি‌নি।

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ব‌লেন, সংস্কার কমিশন পিআর পদ্ধতি বিষয়টি আনেনি। তবে, দু’-একটি রাজনৈতিক দল সেই পদ্ধতির কথা বলছে এবং সেটার জন্য তারা আন্দোলন করছে। আন্দোলনের লক্ষ্য একটাই—নির্বাচন বিলম্বিত করা। জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার যে প্রক্রিয়া, সেই প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা।

তি‌নি ব‌লেন, পিআর পদ্ধতি এই দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। আমাদের দলের পক্ষ থেকে তো আমরা স্পষ্ট বলেছি। জনগণই এই পদ্ধতি গ্রহণ করবে না। চাপিয়ে দেওয়া কোনো কিছু মানুষ গ্রহণ করবে না।

পিআর পদ্ধতি সম্প‌র্কে বিএন‌পির মহাসচিব ব‌লেন, দেশে হঠাৎ একটা নতুন বিষয় এসেছ, যা সম্পর্কে কারো কোনো ধারণাই নেই; সেটা হলো, পিআর পদ্ধতি। এই পদ্ধতি সম্পর্কে এই হাউজের (আলোচনা সভার) মধ্যে কয়জন আছেন, বলেন তো যে, পিআর পদ্ধতি বোঝেন, আছেন নাকি? 

উপস্থিত বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের (জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের) শীর্ষ নেতারা জবাব দেন, না, না, বুঝি না।

মির্জা ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কমিটমেন্ট— আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন। আমরা সেটাই দেখতে চাই। জনগণ নির্বাচন দেখতে চায় এবং সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চায়। গণতন্ত্রের মধ্যে দিয়েই জনগণের আশা পূরণ করতে চায়।

সংস্কারের মধ্যেই বিএনপির জন্ম হয়েছে, জানিয়ে দলটির মহাসচিব বলেন, আমরা সব সময় সংস্কারের পক্ষে ছিলাম, যদিও আমাদের বিরুদ্ধে প্রচুর প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে, আমরা নাকি সংস্কারের বিরুদ্ধে। আমরা বলে দিতে চাই, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে বিএনপি। মিডিয়ার স্বাধীনতা এটাও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময়ের। বিএনপির জন্মই সংস্কারের মধ্য দিয়ে। জিয়াউর রহমান যেমন অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে জাগিয়ে তুলেছিলেন, তেমনই কর্মযজ্ঞে হাতে নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন তারেক রহমান।

“নির্বাচনে সেই দলকেই জনগণ বেছে নেবে, যে দল পরীক্ষিত, অতীতে যারা পরীক্ষা দিয়েছে অর্থাৎ সরকারের ছিল, কাজ করেছে। যে দল মানুষকে আশার আলো দেখিয়েছে, যে দল অন্ধকার থেকে আলোতে টেনে নিয়ে এসেছে অর্থাৎ মানুষ বিএনপিকে ভোট দেবে,” ব‌লেন তি‌নি।

মির্জা ফখরুল বলেন, কিছু মানুষ চেষ্টা করে আমাদের একাত্তরে সালের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিতে। বিষয়টি সব সময় মাথায় রাখতে হবে, একাত্তরে যুদ্ধ হয়েছিল বলেই স্বাধীন হয়েছিলাম, নতুন চিন্তা করতে পারছি। স্বাধীন হয়েছিলাম বলেই কিন্তু বাংলাদেশে মানুষের অবস্থার পরিবর্তন করার সংগ্রাম করতে পারছি।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেটি মাথায় রেখে আমরা যেন সামনের দিকে এগিয়ে যাই। অনেক ষড়যন্ত্র আছে, চক্রান্ত আছে। ষড়যন্ত্র-চক্রান্তকে পরাজিত করার শক্তি এ দেশের মানুষের আছে।