আন্দোলনকারী এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেছেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে যদি বাধা সৃষ্টি বা আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর হামলা হয়, তাতে সৃষ্ট অশান্তির পুরো দায় সরকারকে নিতে হবে।’’
রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর হাইকোর্টের মাজার রোড এলাকায় ভুখা মিছিলে বাধা-পরবর্তী অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।
দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘‘কর্মসূচির সময় বিভিন্ন স্থানে শিক্ষকদের আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাঁদপুরে ৪০০ শিক্ষকের লঞ্চ আটকা পড়ার খবর পাওয়া গেছে। গাজীপুর ও টাঙ্গাইলেও শিক্ষকরা বাসে আটকে পড়েছেন। এ সব ঘটনার প্রেক্ষিতে শিক্ষকরা যে ধরনের হেনস্থা হচ্ছে, তার দায়ভার ঠিকই সরকারকেই নিতে হবে।’’
বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা বাড়ানোর দাবিতে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনশনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা বরিবার (১৯ অক্টোবর) ‘ভুখা মিছিল’ নিয়ে শিক্ষা ভবন (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর- মাউশি) অভিমুখে পদযাত্রা করে। বিকেলে হাইকোর্ট সংলগ্ন মাজার এলাকায় পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে পদযাত্রা আটকে দেয়।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১ হাজার ৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা ও কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ করার দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষক–কর্মচারীরা।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আন্দোলনরত শিক্ষকরা এই প্রজ্ঞাপন প্রত্যাখ্যান করে তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে তারা থালা-বাটি হাতে ভুখা মিছিল করে।
অধ্যক্ষ আজিজী বলেন, ‘‘আমাদের আন্দোলনের মূল দাবি বাড়িভাড়া ২০ শতাংশ, চিকিৎসা ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং উৎসব ভাতার ৭৫ শতাংশ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা। এই দাবিগুলো পূরণ না হলে আন্দোলন চলবে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য মোট প্রয়োজন মাত্র ৩৪ কোটি টাকা, যা প্রশিক্ষণ তহবিল থেকে স্থানান্তর করা সম্ভব; প্রয়োজন হলে পরবর্তী বাজেটের মাধ্যমে বাকি অর্থ দেওয়া যাবে।’’
শিক্ষকদের আন্দোলন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষকেরা দেশের নির্বাচনের প্রধান 'স্টেকহোল্ডার'। প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারসহ প্রায় ৮০ শতাংশ নির্বাচনি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে শিক্ষকেরা নিয়োজিত। আন্দোলনে জামায়াত, এনসিপি, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল একাত্মতা প্রকাশ করেছে, যেটি আন্দোলনের ব্যাপক সমর্থন নির্দেশ করে।’’
অধ্যক্ষ আজিজী জানিয়েছেন, পরবর্তী ধাপে শিক্ষা ভবনের সামনে বড় মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে এবং শেষে শহীদ মিনারে ফিরে আসা হবে। তিনি সতর্ক করেছেন, কর্মসূচির সময়ে কারো দ্বারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তাকে পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হবে।