জাপানের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কট্টরপন্থি রক্ষণশীল ব্যক্তিত্ব সানায়ে তাকাইচি নির্বাচিত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দেশটির পার্লামেন্টে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। খবর বিবিসির।
জাপানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ- উভয় কক্ষেই তাকাইচি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছেন। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী তাকাইচি নিম্নকক্ষে পেয়েছেন ২৩৭ ভোট, যা সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ২৩৩ ভোটের চেয়ে বেশি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ডেমোক্রেটিক পার্টি অব জাপানের প্রার্থী ইউশিহিকো নোদা পেয়েছেন ১৪৯ ভোট।
রান অফ ভোটের পর, পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষও তাকাইচিকে জাপানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করেছে।উচ্চকক্ষে তাকাইচি ১২৫ ভোট পেয়েছেন, যা সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য তার প্রয়োজনীয় ভোটের চেয়ে একটি বেশি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলছে, জাপানে এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, কারণ ইতিহাসে এই প্রথমবার দেশটি শীর্ষপদে একজন নারীকে নির্বাচিত করেছে। পুরুষ নেতৃত্বাধীন জাপানের রাজনীতিতে নতুন এক অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছেন তাকাইচি।
গতকাল সোমবার, জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও প্রধান বিরোধী দল জাপান ইনোভেশন পার্টি জোট সরকার গঠনে চুক্তি স্বাক্ষর করে। এ চুক্তির ফলে তাকাইচির প্রধানমন্ত্রী হওয়া অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়। তবে, শঙ্কা ছিল প্রধানমন্ত্রী হতে দুই দলের সব ভোটের পরও আরো দুই ভোট দরকার ছিল তার।
এ মাসের শুরুতে তাকাইচি ক্ষমতাসীন দল এলডিপির নেতা নির্বাচিত হন। তবে এলডিপির জোট সরকার থেকে দীর্ঘদিনের সহযোগী দল কোমেইতো সরে দাঁড়ালে রাজনৈতিক অচলাবস্থায় পড়ে জাপান। শুরু হয় নতুন জোট সরকার গঠনের আলোচনা।
তাকাইচি এলডিপির নেতা নির্বাচিত হওয়ার পরপরই তাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাকাইচির জয়কে তিনি ‘অসাধারণ খবর’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তাকাইচিকে ‘খুবই সম্মানিত ব্যক্তিত্ব যিনি ব্যাপক জ্ঞান ও শক্তির অধিকারী’ বলে প্রশংসা করার করেন। তাকে জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শুভেচ্ছা জানান। যদিও তাকাইচি সেসময় এ পদে নিশ্চিত হননি।
জবাবে তাকাইচি পোস্টে বলেছিলেন যে, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের বার্তায় ‘খুব সন্তুষ্ট’ এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ করার জন্য (ট্রাম্পের সঙ্গে) একসঙ্গে কাজ করার আশা করছেন।
তাকাইচি এখন পর্যন্ত নিজেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এ মাসের শুরুতে বলেছিলেন, মার্কিন শুল্ক আরোপ সত্ত্বেও তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। যা ইঙ্গিত দেয় যে, তিনি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পরিকল্পনা করছেন।