হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় যৌথবাহিনীর অভিযানে পাহাড়ি ছড়া থেকে অবৈধভাবে সিলিকা বালু উত্তোলনের অভিযোগে সাতজনকে কারা ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সেনাবাহিনী, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ যৌথভাবে উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের বদরগাজী ও হলহলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযান শেষে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে চারজন কারা ও অর্থদন্ড এবং তিনজনকে শুধু অর্থদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত দেউন্দি গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে জসিম উদ্দিন (৪০), কাঠালবাড়ির সিরাজ মিয়ার ছেলে খয়ের মিয়া (৩১), আব্দুল গনির ছেলে আবু সায়েম (৪৭) ও হলদিউড়া গ্রামের ডেঙ্গু খানের ছেলে রউফ খানকে (৪৫) ১ মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডের আদেশ দেন।
এছাড়া হলহলিয়া গ্রামের ইন্তাজ উল্যার ছেলে ফারুক মিয়া (৫৫), কাঁঠালবাড়ী গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে তাউজ মিয়া (৪১) এবং দেউন্দির আইয়ুব আলীর ছেলে আলী হায়দরকে (৫৮) ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন।
জানা যায়, পাহাড়ি ছড়া থেকে ড্রেজার মেশিনে দেদারসে বালু উত্তোলন চলছে। ছড়ার তলদেশ খুঁড়ে বালু তোলায় সরু ছড়াটি পরিণত হয়েছে গভীর খাদে। বছরের পর বছর অনিয়ন্ত্রিত বালু তোলায় হুমকির মুখে পড়েছে পুরো এলাকা। নিয়মিত বালু তোলায় ছড়ার দুই তীরও ভেঙে পড়ছে, তৈরি হয়েছে ঘরবাড়ি ধসের ঝুঁকি।
হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর চুনারুঘাট, মাধবপুর ও বাহুবল উপজেলার কোনো পাহাড়ি ছড়ায় সিলিকা বালুর মহাল ইজারা দেওয়া হয়নি। তবুও এসব এলাকায় চলছে অবাধ বালু উত্তোলন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে একাধিক বালু লুটের চক্র। তাদের নামে কথা বললেই হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়।
ইউএনও মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “বুধবার ভোর থেকে অভিযান শুরু হয়। দীর্ঘ অভিযানে আটক সাতজনের মধ্যে চারজনকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং তিনজনকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।”
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, “দণ্ডপ্রাপ্তদের বিকেলে কঠোর নিরাপত্তায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”