“শ্রমসংস্কার আইনে বলা হয়েছে, প্রত্যেক শ্রমজীবী মানুষের একটি রেজিস্ট্রেশন কার্ড থাকতে হবে। এই কার্ড তার স্বীকৃতি-সে একজন শ্রমিক, একজন শ্রমজীবী মানুষ। এই শ্রমজীবী মানুষের রেশন, আবাসন ও পেনশনের নিশ্চয়তা রাষ্ট্রকে দিতে হবে।”
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আকরাম খাঁ মিলনায়তনে ঢাকা জেলা ট্যাক্সি, ট্যাক্সিকার ও অটোরিকশা চালক শ্রমিক ইউনিয়ন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন,“আমাদের দেশের অন্যতম দক্ষ জনশক্তি হচ্ছে গাড়িচালকরা। তাদের নিবন্ধিত লাইসেন্স রয়েছে। পরীক্ষা দিয়ে লাইসেন্স নিয়ে একজন দক্ষ জনশক্তি হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার পরই তিনি রাস্তায় নামতে পারেন। তাহলে এই দক্ষ মানুষদের যুগের পর যুগ এত অমানবিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয় কেন-এটা আমাদের খুঁজে দেখা দরকার।”
তিনি বলেন, “মৌলিক দাবিগুলো যেমন নিয়োগপত্র, ন্যায্য মজুরি-যা বাজারের মানদণ্ড নয় বরং যৌক্তিক আলোচনার ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে। সেটা আদায়ে চালকদের নিজেদের মধ্যে সংগঠিত হতে হবে। একইসঙ্গে অন্যান্য সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করা দলগুলোর সঙ্গে কর্মসূচিভিত্তিক ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।”
আলোচনা সভায় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, “আমরা এমন একটি আইন চাই, যেখানে ড্রাইভারদের কর্মঘণ্টা, কর্মপরিবেশ, চাকরির নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা সুনির্দিষ্ট থাকবে। শ্রমসংস্কার আইনেও বলা হয়েছে, প্রত্যেক শ্রমজীবী মানুষের একটি রেজিস্ট্রেশন কার্ড থাকতে হবে। এই কার্ড তার স্বীকৃতি-সে একজন শ্রমিক, একজন শ্রমজীবী মানুষ। এই শ্রমজীবী মানুষের রেশন, আবাসন ও পেনশনের নিশ্চয়তা রাষ্ট্রকে দিতে হবে।”
তিনি বলেন, “হালকা যানবাহনের জন্য আমাদের লাইসেন্স আছে, কিন্তু শ্রম আইনে হালকা চালকদের কোনো স্বীকৃতি নেই। আমি ড্রাইভিং লাইসেন্স পেলাম হালকা যানের চালক হিসেবে, কিন্তু শ্রম আইনে তার স্বীকৃতি পেলাম না। কারণ, আমরা এতটাই ‘হালকা’ যে আইনেও আমাদের স্থান হয়নি।”
রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, “শ্রম আইনের ৫ নম্বর ধারায় বলা আছে-নিয়োগপত্র না দিয়ে কাউকে নিয়োগ করা যাবে না। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে নিয়োগপত্র হলো চাবি। কাল মালিক যদি বলেন, ‘কাল থেকে আর আসবেন না, চাবিটা দিয়ে যান’-তাহলেই শেষ। অথচ প্রত্যেক চালকের অভিজ্ঞতার একটা মূল্য আছে। বয়স যত বাড়ে, অভিজ্ঞতা বাড়ে; কিন্তু চাকরির ঝুঁকিও তত বাড়ে।”