পার্বত্য চট্টগ্রামে জোরপূর্বক খ্রিস্টানকরণের মাধ্যমে খ্রিস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে বান্দরবানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বান্দরবান প্রেস ক্লাবের সামনে ‘সর্বস্তরের খ্রিস্টান সম্প্রদায়’ ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন শতাধিক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, একটি দেশে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেই রাষ্ট্র গড়ে ওঠে। খ্রিস্টান হয়ে জন্ম নেওয়া কোনো অপরাধ নয়। এটি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করা হচ্ছে। পার্বত্য অঞ্চলে সব সম্প্রদায়ের মানুষ নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করে আসছে। বাইবেল নিয়ে ধর্মীয় উপদেশ বা সভা-সমাবেশ করা মানে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র নয়।
বক্তারা আরো বলেন, আমরা দেশের আইন মেনে চলি, জন্মসূত্রে বাংলাদেশি নাগরিক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি আমরা গভীরভাবে শ্রদ্ধাশীল। যে রাষ্ট্রে জন্মেছি, তাকে ধ্বংস করার কোনো ষড়যন্ত্র আমরা করতে পারি না।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য লালজার লম বম, মানবাধিকার কর্মী লেলুং খুমী, জামান সাইলুক, দিনেন্দ্র ত্রিপুরা ও জজ ত্রিপুরা। এ সময় বান্দরবানের বিভিন্ন চার্জের পাদ্রীরাও উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল পার্বত্য চট্টগ্রামের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বলছে, এখানে স্থানীয়দের জোরপূর্বক খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তর করা হচ্ছে।
এ ধরনের অপপ্রচার পার্বত্য চট্টগ্রামের মাত্র ৩.২৬ শতাংশ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য অপমানজনক, অস্বস্তিকর এবং অপবাদমূলক। এটি তাদের অস্তিত্বকে ধ্বংসের লক্ষ্যে পরিচালিত একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।
এতে আরো বলা হয়েছে, স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রে সব নাগরিকের সমানভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগের সাংবিধানিক অধিকার থাকলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের খ্রিস্টানরা ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে নানা সময় হয়রানির শিকার হচ্ছেন-যা সংবিধান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।