আন্তর্জাতিক

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া শান্তি চুক্তির জন্য মালয়েশিয়া সফরে ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রবিবার (২৬ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকালে অবতরণ করেছেন। সেখানে তাকে স্বাগত জানান মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।

ব্রিটিশ সংবামাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সফরে ট্রাম্পের প্রথম কর্মসূচি হলো একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর করা। এই চুক্তির লক্ষ্য থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘর্ষের পর সম্পর্ক স্বাভাবিক করা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট মালয়েশিয়ায় অবস্থানকালে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক জোটের (আসিয়ান) শীর্ষ সম্মেলনেও যোগ দেবেন।

কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার নেতারা এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এটিকে ‘শান্তিচুক্তি’ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে চুক্তির আনুষ্ঠানিক নাম ‘থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সম্পর্ক সংক্রান্ত যৌথ ঘোষণা’। চুক্তির মধ্যে রয়েছে ভারী অস্ত্র প্রত্যাহার, যৌথভাবে স্থলমাইন অপসারণ এবং সীমান্ত স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ।

ওয়ারফোর্স ওয়ানে ট্রাম্প নিজের ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মধ্যে একটি ‘বড় শান্তিচুক্তি’ সই করার উদ্দেশ্যে তিনি মালয়েশিয়ার পথে আছেন। তিনি পৌঁছানোর পরপরই চুক্তি সই করা হবে।

রবিবার বিকেলে চুক্তিটি সই করার কথা ছিল। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল চুক্তি সই অনুষ্ঠানটি এগিয়ে আনার অনুরোধ করেন। গতকাল শনিবার থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্নের মা রানি সিরিকিত মারা গেছেন। ফলে থাই প্রধানমন্ত্রীর এ অনুরোধ করেছেন।

গত জুলাই মাসে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সামরিক সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় ৩ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

পাঁচ দিনের লড়াইয়ের পর ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। যদিও এরপর থেকে উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে চলেছে।

গত ১৪ অক্টোবর মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ হাসান কুয়ালালামপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২৬-২৮ অক্টোবর মালয়েশিয়ার রাজধানীতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংগঠন আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ২৬ অক্টোবর মালয়েশিয়া সফর করবেন। তিনি থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া শান্তি চুক্তি প্রত্যক্ষ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।”

মোহাম্মদ হাসান বলেন, “থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ‘আরো বিস্তৃত যুদ্ধবিরতি চুক্তি’ বাস্তবায়নে মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র সহায়তাকারী হিসেবে কাজ করবে। এই চুক্তির আওতায় উভয় পক্ষকেই সীমান্ত থেকে সব ল্যান্ডমাইন অপসারণ ও সামরিক যন্ত্রপাতি প্রত্যাহার করতে হবে।”

মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা আশা করি উভয় পক্ষই এই শর্তগুলো পূরণ করতে পারবে এবং আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের সময় একটি ঘোষণাপত্র স্বাক্ষরিত হবে।”