শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে জার্মান ফেডারেল প্রজাতন্ত্রের সংসদ সদস্য বরিস মিজাতোভিচ সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে উপদেষ্টার এ সাক্ষাৎ করেন তিনি।
সাক্ষাৎকালে শ্রম ও নৌপরিবহন খাতের বিভিন্ন বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মতবিনিময় হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল, বাংলাদেশের শ্রম খাতের উন্নয়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার, বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা জোরদার এবং বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে জিআইজেডের (জার্মান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা) কার্যক্রম।
বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় ও প্রতিশ্রুতিশীল জাহাজ শিল্পে জার্মান বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম সামুদ্রিক দেশ। মাতারবাড়িতে নির্মাণাধীন একটি গভীর সমুদ্রবন্দর ছাড়াও দেশের আরো তিনটি সমুদ্রবন্দর রয়েছে। এছাড়া ৫৪টি অভ্যন্তরীণ নদী বন্দর রয়েছে।”
তিনি বলেন, “দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ সরাসরি বা পরোক্ষভাবে সামুদ্রিক খাতের ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ কারখানাগুলোতে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সমুদ্রগামী জাহাজ নির্মিত হচ্ছে এবং এসব জাহাজ বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। জার্মান বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের ক্রমবিকাশমান জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগ করে দক্ষ ও সাশ্রয়ী শ্রমবাজারের সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন।”
মাতারবাড়িতে একটি আন্তর্জাতিকমানের ডকইয়ার্ড নির্মাণেও জার্মান বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানান উপদেষ্টা।
ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) কাউন্সিলের আসন্ন ২০২৬-২৭ মেয়াদে ক্যাটাগরি ‘সি’ এর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে উল্লেখ করে ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন নির্বাচনে বাংলাদেশের পক্ষে জার্মান সরকারের সমর্থন কামনা করেন। তিনি আইএমওভুক্ত সব সদস্য রাষ্ট্রের সামুদ্রিক খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এ সময় জার্মান সংসদ সদস্য বাংলাদেশের প্রার্থিতার বিষয়ে জার্মান সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
বৈঠকে নৌপরিবহন উপদেষ্টা জাহাজ নির্মাণ শিল্প, বন্দর অবকাঠামো উন্নয়নসহ অন্যান্য খাতে বাংলাদেশ ও জার্মানির বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আরো জোরদার করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
উপদেষ্টা শ্রমিক অধিকার রক্ষা, শোভন কর্মপরিবেশ ও পেশাগত স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি জার্মান সংসদ সদস্যের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ক্রেতা ব্র্যান্ডগুলোর কাছে বাংলাদেশের তৈরি পণ্যের জন্য প্রত্যাশিত ন্যায্য মূল্য (ফেয়ার প্রাইজ) নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
উভয় পক্ষই শ্রম ও নৌপরিবহন খাতে পারস্পরিক সম্পর্ক আরো সম্প্রসারণ এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের নতুন সুযোগ সৃষ্টির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
বৈঠকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) দেলোয়ারা বেগম, বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোটজ, গবেষণা সহকারী ডেনিজ-ক্যাথরিন বেনটেলে এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।