রাতভর সংঘাতের পর দিনভর উত্তেজনার জের ধরে গতকাল সোমবার (২৭ অক্টোবর) বন্ধ ঘোষণা করা হয় সাভারের বেসরকারি সিটি ইউনিভার্সিটি। শিক্ষার্থীশূন্য পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। তবে, পুরো বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে এখনো ক্ষতচিহ্ন। হামলার সাক্ষী পোড়া বাস, প্রাইভেটকার, প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্যের কার্যালয়সহ বিভিন্ন কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষের ভাঙাচোরা আসবাবপত্র, জানালার কাচ, মূল ফটক ও সীমানা প্রাচীরের ভাঙা অংশ। তবে, পরিস্থিতি এখন শান্ত।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে সাভারে সিটি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।
রবিবার মধ্যরাত থেকে সোমবার ভোর রাত পর্যন্ত আশুলিয়ার খাগান এলাকায় সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একই এলাকার বেসরকারি ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে সিটি ইউনিভার্সিটিতে ঢুকে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেন ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। এর জের ধরে সোমবার সিটি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস ৪ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন সন্ধ্যার মধ্যেই ক্যাম্পাস ও হল ত্যাগ করেন শিক্ষার্থীরা।
হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় থানায় মামলাসহ তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটি ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ।
ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করা দরবেশ নামের এক ব্যক্তি বলেছেন, গতকালই সব শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস ছেড়ে গেছে। তবে, আমরা এখনো একটু ভয়েই আছি।
সিটি ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মঙ্গলবার থানায় মামলা করা হবে। তদন্ত কমিটিও করা হবে।
এসব বিষয়ে সিটি ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেছেন, হামলাকারীদের আচরণ শিক্ষার্থীসুলভ ছিল না। তারা আমার কার্যালয়সহ গুরুত্বর্পণূ সব কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। গাড়িগুলো আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা আজ থানায় মামলা করব এবং ইউজিসিতে লিখিত অভিযোগ জানাব। অভ্যন্তরীণভাবে পুরো বিষয়টি তদন্ত করা হবে।
তিনি বলেন, সমস্যা সমাধান ও শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু শিক্ষাজীবন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমারদের মূল লক্ষ্য। ড্যাফোডিল কর্তৃপক্ষ যদি আন্তরিক হয় এবং আলোচনার মধ্যে দিয়ে আমাদের দাবিগুলো মেনে নেয়, তখন মামলা তুলে নেওয়ার ব্যাপারেও আমরা সিদ্ধান্ত নেব।
গত রবিবার রাত ৯টার দিকে সাভারের আশুলিয়ায় খাগান এলাকায় গায়ে থুতু লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিটি ইউনিভার্সিটি ও ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটিতে ঢুকে হামলা করেন। এ সময় ক্যাম্পাসে রাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি বাস, একটি প্রাইভেটকারে আগুন দেওয়াসহ একটি বাস, দুটি প্রাইভেট কার, একটি মোটরসাইকেল, প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্যের কার্যালয়সহ বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। ভোর রাত পর্যন্ত এ হামলা চলে।