হবিগঞ্জের মাধবপুর, নবীগঞ্জ ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত আটটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের চারটি বন্ধ থাকায় ৮৮৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে। অগ্নিকাণ্ড, যান্ত্রিক ত্রুটি ও চুক্তি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার কারণে কেন্দ্রগুলো বন্ধ রয়েছে।
জেলার আটটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনক্ষমতা প্রতিদিন ১ হাজার ৭০৬ মেগাওয়াট। এর মধ্যে চারটি বন্ধ থাকায় বাকি চারটি থেকে এখন উৎপাদন হচ্ছে ৮২০ মেগাওয়াট। ফলে ৮৮৬ মেগাওয়াট উৎপাদন কমেছে।
মাধবপুরে শাহজিবাজার ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র তিন বছর আগে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকে বন্ধ। এ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুল মান্নান জানান, চায়না ও ইউরোপ থেকে মেরামতের যন্ত্রপাতি আনতে সময় লেগেছে। ঢাকার হজরত শাজালাল বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে অগ্নিকাণ্ডে কিছু যন্ত্রাংশ আটকা পড়েছে। এ জন্য চালু হচ্ছে না। তবে নভেম্বরের মধ্যে আংশিকভাবে মেরামত করে অন্তত ১৫০ মেগাওয়াট উৎপাদনে ফেরাতে কাজ চলছে বলে জানান তিনি।
শাহজিবাজারের আরেকটি ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রও অগ্নিকাণ্ডে কমপ্রেসার বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বন্ধ রয়েছে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হতে দেরি হচ্ছে। তবে বিদ্যুৎ বিভাগের একটি সূত্র বলছে, কেন্দ্রটি দ্রুত উৎপাদনে ফিরবে, এমন সম্ভাবনা কম।
নবীগঞ্জ উপজেলার বিবিয়ানা সাউথ ৩৮৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গত আগস্টে গ্যাস টারবাইনের ত্রুটির কারণে উৎপাদন বন্ধ হয়। এ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান জানান, মেরামত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী মার্চে কেন্দ্রটি পুনরায় চালুর লক্ষ্যে কাজ চলছে।
এছাড়া শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নছরতপুরের ১১ মেগাওয়াট কেন্দ্র চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় বন্ধ রয়েছে। পুনরায় চালুর সম্ভাবনা নেই।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির হবিগঞ্জ জেলার প্রায় সাড়ে ৬ লাখ গ্রাহকের জন্য প্রতিদিন বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয় ১৫৭ মেগাওয়াট। কিন্তু জাতীয় গ্রিড থেকে দেওয়া হচ্ছে ১৩৫ মেগাওয়াট। বাকি ২২ মেগাওয়াটের ঘাটতি মেটাতে হচ্ছে লোডশেডিং দিয়ে।
বিপিডিবির উপসহকারী প্রকৌশলী চয়ন কান্তি সেন বলেন, ‘‘ঘাটতি পূরণের জন্য জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ চেয়েও পাই না। নানা কারণে উৎপাদন কমেছে। ২২ মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। তারপরও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’’