বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মধ্যে পোশাকশিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি ও রূপান্তর নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর উত্তরায় এই বৈঠক হয়।
বৈঠকে আইএমএফ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এজেন্ডায় পোশাক খাতের অবদানকে উচ্চ প্রশংসা করে এবং শিল্প খাতের চলমান রূপান্তর প্রচেষ্টায় সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেয়।
বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান সভাপতিত্ব করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহসভাপতি ইনামুল হক খান, সহসভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম, সহসভাপতি ভিদিয়া অমৃত খান, পরিচালক নাফিস-উদ-দৌলা এবং পরিচালক ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী।
আইএমএফ প্রতিনিধি দলে ছিলেন সিনিয়র ইকোনমিস্ট কিয়াও চেন, সিনিয়র ইকোনমিস্ট রুইফেং ঝাং এবং ইকোনমিস্ট আয়া সাইদ।
আইএমএফের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পোশাকশিল্পের ভূমিকা, চ্যালেঞ্জ এবং ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বৈশ্বিক অস্থিরতা সত্ত্বেও কিভাবে পোশাকশিল্প প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়।
বিজিএমইএ নেতারা জানান, প্রতিষ্ঠানটি এখন শ্রমনির্ভর মডেল থেকে বেরিয়ে এসে মূল্য সংযোজিত পণ্য, উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিগত মানোন্নয়নের মাধ্যমে উচ্চমূল্যের উৎপাদন ব্যবস্থার দিকে এগোচ্ছে। তারা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, ম্যান-মেইড ফাইবার (এমএমএফ) ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইল উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বৈঠকে এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশের জন্য সম্ভাব্য শুল্ক পরিবর্তন ও বাণিজ্য সুবিধা হ্রাসের বিষয়েও আলোচনা হয়। বিজিএমইএ নেতারা জানান, তারা সরকারকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) সম্পাদনের পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে বাজারে প্রতিযোগিতা বজায় থাকে।
বিজিএমইএ নেতারা বৈঠকে শিল্প খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে ব্যবসা পরিচালন সহজীকরণ ও ব্যয় হ্রাসের ওপর জোর দেন। তারা উল্লেখ করেন, বোর্ড ইতিমধ্যে সরকারকে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের স্থিতিশীলতা, বন্দর ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বৃদ্ধি, কাস্টমস ও বন্ড প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং সুদের হার এক অঙ্কে রাখার বিষয়ে সুপারিশ করেছে। এছাড়া তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন দ্রুত সম্পন্ন করার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন।