মানিকগঞ্জে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় আইনজীবীর বিরুদ্ধে সাংবাদিককে কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে মানিকগঞ্জ আইনজীবী সমিতির ১ নম্বর ভবনের সামনে দায়িত্ব পালনের সময় মানিকগঞ্জ জজ কোর্টের আইনজীবী মো. জাহাঙ্গীর আলম সিদ্দিকী মাইটিভির রির্পোটার আজিজুল হাকিমকে কাজে বাঁধা দেন এবং তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
এসময় ঢাকা পোস্ট ডটকমের রির্পোটার সোহেল হোসাইন ও মোহনা টিভির সাধন সূত্রধরসহ কয়েকজন আইনজীবী এগিয়ে গিয়ে জাহাঙ্গীর আলমকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।
মাইটিভির সাংবাদিক আজিজুল হাকিম জানান, একটি রিপোর্টের জন্য কয়েকজন ভুক্তভোগীর বক্তব্য আনতে শুক্রবার দুপুরে মানিকগঞ্জ আইনজীবী ১ নম্বর ভবনের সামনে যান। ১ নম্বর ভবনের ভেতর থেকে এক নারী কাঁদতে কাঁদতে বের হন। তার সঙ্গে আরা কয়েজন নারী-পুরুষ ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে জাহাঙ্গীর আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আদালত চত্বর থেকে চলে যেতে বলেন।
“ওই নারী ও পুরুষদের ভিডিও করায় ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করে আজিজুল হাকিম বলেন, তখন তাকে বাঁধা দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিককের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তি করেন এবং আইনজীবী সমিতির ভবনের ভেতরে নিয়ে যেতে চান,” বলেন তিনি।
ঘটনার পরম্পরার বর্ণনা দিতে গিয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক আজিজুল হাকিম বলেন, এ সময় আদালত চত্বরে থাকা অপর দুই সাংবাদিক ঢাকা পোস্ট ডটকমের রির্পোটার সোহেল হোসাইন ও মোহনা টিভির সাধন সূত্রধরসহ কয়েকজন আইনজীবী এগিয়ে এলে আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম আরো ক্ষিপ্ত হয়ে যান। তখন সবার উপস্থিতিতে আবার মাইটিভির সাংবাদিকের ওপর চড়াও হন এবং ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
তিনি জানান, তখন আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তার সঙ্গে থাকা অন্য আইনজীবীরা তাকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন এবং আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলমের এক সহকর্মী তাকে আদালত চত্বর থেকে নিয়ে যান।
জাহাঙ্গীর আলম প্রথমেই সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া হয় জানিয়ে আজিজুল হাকিম বলেন, “পরিচয় দেওয়ার সময় আমার হাতে মাইটিভির মাইক্রোফোন ও স্ট্যান্ডসহ ক্যামেরা ছিল। তারপরও তিনি পেশাগত কাজে বাঁধা দেন এবং ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য চেষ্টায় ধাক্কা দেন।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে কথা হলে বলেন, “শুক্রবার দুপুরে আমার চেম্বার (আইনজীবী সমিতির ১ নম্বর ভবনের ১০১ নম্বর কক্ষ) থেকে একটি যৌতুক মামলার সালিশ শেষে বের হয়ে আসার সময় ১ নম্বর ভবনের গেটে বিষয়টি নিয়ে জানতে সাংবাদিকরা আমাকে প্রশ্ন করেন। অনুমতি না নিয়ে ভিডিও ধারণ করতে থাকেন। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়।”
তবে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন জাহাঙ্গীর আলম।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস বলেন, “সাংবাদিকের পেশাগত কাজে বাঁধা দেওয়া অন্যায়। আমরা ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”