আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়াকে সতর্ক করল উত্তর কোরিয়া

দক্ষিণ কোরিয়ার একটি বন্দরে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী আগমনের ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী নো কোয়াং চোল সতর্ক করে বলেছেন, পিয়ংইয়ং শত্রুদের বিরুদ্ধে ‘আরো আক্রমণাত্মক পদক্ষেপে’ নেবে।

শনিবার (৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (৭ নভেম্বর) উত্তর কোরিয়া তার পূর্ব উপকূলে সমুদ্রে স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার চালানোর একদিন পরই দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই হুমকি দিলেন।

শনিবার উত্তর কোরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) প্রতিরক্ষামন্ত্রী বক্তব্য উদ্ধৃত করে এক প্রতিবেদনে বলেছে, “আমরা শক্তিশালী শক্তির মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং শান্তি রক্ষার নীতিতে শত্রুদের হুমকির বিরুদ্ধে আরো আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ দেখাব।”

দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপও উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রকাশ করেছে যে, “উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তার সব ধরনের হুমকি সরাসরি লক্ষ্যবস্তু হবে এবং প্রয়োজনীয় উপায়ে জবাব দেয়া হবে।”

এর আগে বৃহস্পতিবার সাইবার-সম্পর্কিত অর্থপাচার কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ওয়াশিংটন উত্তর কোরিয়ার কিছু ব্যক্তি ও সংস্থার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তার কয়েকদিন আগে দক্ষিণ কোরিয়া সফর করেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। এরপরপরই শুক্রবার উত্তর কোরিয়া তার পূর্ব উপকূলে সাগরে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের একটি পরীক্ষা চালায়।

যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সম্প্রতি দুই কোরিয়ার সীমান্ত সফর এবং পরে সিউলে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা বৈঠকের কঠোর সমালোচনা করেছেন উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী চোল। তিনি অভিযোগ করেন, এই বৈঠকগুলো উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি বাড়ানো এবং যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক ও প্রচলিত বাহিনীকে একত্র করার ষড়যন্ত্রের অংশ।

চোল বলেন, “এটি উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুতার একটি প্রকাশ্য উদাহরণ।”

দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে বুধবার বুসানের নৌঘাঁটিতে পৌঁছেছে মার্কিন পারমাণবিক শক্তিচালিত বিমানবাহী রণতরী 'জর্জ ওয়াশিংটন। 

গত মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়া সফরকালে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেন, “সিউলের সঙ্গে ওয়াশিংটনের জোটের মূল লক্ষ্য উত্তর কোরিয়াকে নিরস্ত করা।” তবে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত মার্কিন বাহিনীকে আঞ্চলিক হুমকির মোকাবিলায় আরো নমনীয়ভাবে ব্যবহার করার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে জানান তিনি।

গত মাসের শেষের দিকে দক্ষিণ কোরিয়া সফর করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সফর শুরুর সময় তিনি উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তবে শেষপর্যন্ত দুই নেতার মধ্যে কোনো বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি, বরং এক সপ্তাহ পরই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায় পিয়ংইয়ং।