দেশের সরকার প্রধান থেকে শুরু করে বিচার প্রধান দুর্নীতিতে রসগোল্লার মতো ডুবে ছিল বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলী আকবর আজিজী।
রবিবার (৯ নভেম্বর) পঞ্চগড় সরকারি অডিটোরিয়ামে দিনভর গণশুনানি আয়োজনে তিনি এ কথা বলেন।
দুদক কমিশনার বলেন, ‘‘আপনাদের যুবক সন্তানেরা জীবন বাজি রেখে পথে নেমেছিল এবং অন্যায়ের প্রতিকার করেছে। এত দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে যে এখন আমরা সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফিরতে পারি না।’’
মিঞা মুহাম্মদ আলী আকবর আজিজী বলেন, ‘‘একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে, এটাকে সারানোর চাইতে দুর্নীতি যেন আর কেউ না করে, কোনো কর্মচারী যেন দুর্নীতি করার দুঃসাহস না দেখায়; সেই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। সেবা গ্রহিতারা একটু পেছন থেকে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার প্রলোভন যেন না দেন।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘যারা সেবা গ্রহণ করবার জন্য গিয়েছিন, তাদের অন্তত ওই নীতিবোধ থাকতে হবে; আমি অন্যের অধিকার ক্ষুণ্ন করছি বাড়তি কিছু দিয়ে। তাতে দুটি অপকার হচ্ছে। যার প্রাপ্যতা ছিল তাকে বঞ্চিত করলাম। আর যে মানুষটি এই সেবা দেওয়ার জন্য নিয়োজিত, তার ঈমানটা নিলামে তুলে দিলাম।’’
দুদকের এই কমিশনার আরো বলেন, ‘‘আমরা যারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, আমাদেরও লোভ সংবরণ করতে হবে। সেবা গ্রহিতাদের ট্যাক্সের টাকায় আমাদের বেতন হয়। আমরা এটি ভুলে যাই। কখনো কখনো মাথায় কারো হাত থাকলে আমরা লাইনচ্যুত হই। হতে পারেন তিনি বড় ভাই, রাজনীতিবিদ বা আর কেউ। কিন্তু আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত না, ওই বড় ভাই একদিন হাত সরিয়ে নিবেন বা তিনি একদিন থাকবেন না।’’ দুর্নীতি প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
গণশুনানিতে অন্যদের মধ্যে দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন, জেলা প্রশাসক সাবেত আলী, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ডা. খালেদ তৌহিদ পুলকসহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
গণশুনানিতে সরকারি বেসরকারি ৪২টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১৮১টি অভিযোগ জমা হয়। তার মধ্য ১১৮টির শুনানি হয়। যার মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ নিষ্পত্তিও করা হয়। জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতায় ঠাকুরগাঁও দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় গণশুনানির আয়োজন করে।