পেপ গার্দিওলার কোচিং ক্যারিয়ারের এক ঐতিহাসিক দিনে তার শিষ্যরা উপহার দিলো গোল উৎসবের জয়। ম্যানচেস্টার সিটি রবিবার রাতে ইতিহাদে লিভারপুলকে ৩-০ গোলে হারিয়ে গার্দিওলার ১০০০তম ম্যাচে রাখল ঝলমলে স্মৃতি।
প্রথমার্ধে সিটি একচেটিয়া আধিপত্য দেখালেও শুরুটা মোটেও নিখুঁত ছিল না। নবম মিনিটেই ভিএআর সিদ্ধান্তে পেনাল্টি পায় তারা। জেরেমি ডোকুর গতি থামাতে গিয়ে সামান্য ধাক্কা দেন গোলরক্ষক মামারদাশভিলি। প্রথমে রেফারি কিছু বলেননি, কিন্তু রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত বদলান।
তবে হালান্ডের নেওয়া স্পটকিক দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন মামারদাশভিলি। মনে হচ্ছিল, ভাগ্য লিভারপুলের পক্ষে। কিন্তু মাত্র ২০ মিনিট পর সেই হালান্ডই যেন বললেন, ‘‘আমি আছি এখনো!’’ মাতেউস নুনেসের নিখুঁত ক্রসে উড়ে এসে হেডে বল পাঠালেন জালে। এটা তার প্রিমিয়ার লিগের ৯৯তম গোল!
হালান্ডের গোলের পর কিছুটা জেগে ওঠে লিভারপুল। কর্নার থেকে ভ্যান ডাইক দারুণ হেডে বল জালে জড়িয়েছিলেন। কিন্তু অফসাইডে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যান্ড্রু রবার্টসনের কারণে গোলটি বাতিল হয়। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই আসে সিটির দ্বিতীয় গোল। নিকো গঞ্জালেজের দূরপাল্লার শট ভ্যান ডাইকের গায়ে লেগে দিক বদলে জালে জড়ায়। হতভম্ব মামারদাশভিলি কেবল তাকিয়ে থাকলেন।
দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা ছন্দ ফিরে পায় লিভারপুল। ব্র্যাডলির ক্রসে গঞ্জালেজ প্রায় আত্মঘাতী গোল করেই ফেলছিলেন। আবার কাছ থেকে সুযোগ পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন গাকপো। কিন্তু ডোকু যেভাবে দিনটা নিজের করে নিলেন, তা ছিল নিখুঁত শিল্পকর্ম। ৬২ মিনিটে নিকো ও’রেইলির পাস পেয়ে বক্সের বাঁদিক থেকে বেঁকিয়ে এক অসাধারণ শটে বল জালে পাঠান তিনি। এটা ছিল জানুয়ারির পর তার প্রথম লিগ গোল। আর কী দুর্দান্ত সময়েই না এল সেটি!
ডোকু বারবার ভোগাচ্ছিলেন লিভারপুলের ডান প্রান্তের ডিফেন্ডার কনার ব্র্যাডলিকে। তার গতি, বুদ্ধি আর ড্রিবলিংয়ে পুরো ডিফেন্সই হিমশিম খায়।
এই জয়ে ৪ ম্যাচ পর আবারও দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলো সিটি। শীর্ষে থাকা আর্সেনালের ঠিক চার পয়েন্ট পেছনে। বিপরীতে লিভারপুলের জন্য দিনটা ছিল আরেকটি হতাশার গল্প। শেষ ছয় ম্যাচে তাদের পঞ্চম হার!
রিয়াল মাদ্রিদ ও অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে টানা জয়ের পর মনে হয়েছিল আর্নে স্লটের দল আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু সিটির মাঠে তারা যেন হারিয়ে ফেলল সেই আত্মবিশ্বাস, সেই ধার।
শেষ দিকে সালাহ ও সোবোসলাই কিছুটা চেষ্টা করলেও, গোলরক্ষক দোনারুম্মা এবং অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট শট; সব মিলিয়ে লিভারপুলের রাতে আলো জ্বলেনি।
গার্দিওলার ১০০০তম ম্যাচে হালান্ডের শক্তি, ডোকুর জাদু আর সিটির কর্তৃত্বে এক অবিস্মরণীয় জয় পেল ম্যানচেস্টার সিটি।